মোঃ নাসিম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন বাবা-মা হারা এতিম কিশোরী উম্মে কুলসুম (১৭) অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলো। বুধবার বিকাল ৫ঃ৩০ মিনিটের সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় (তারিখ:১৬ /০৭/২০২৫)।
উম্মে কুলসুম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাবা-মা বহু আগেই মারা গেছেন। অভিভাবকহীন অবস্থায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে জীবনযাপন করছিল। কয়েক মাস আগে তার দুটি কিডনিই বিকল হয়ে যায়। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, তার জীবন বাঁচাতে দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন কিংবা ডায়ালাইসিস চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে সেই ব্যয়বহুল চিকিৎসা সম্ভব হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুলসুমের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানানো হয়। কিছু মানুষ এগিয়ে এলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা খরচ জোগাড় করা যায়নি। ফলে তাকে আইসিইউতে রেখেও বাঁচানো সম্ভব হলো না। তার মৃত্যুতে এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রতিবেশীরা জানান, কুলসুম ছিল অত্যন্ত ভদ্র, শান্ত ও পরিশ্রমী মেয়ে। অভাব-অনটনের মধ্যেও সে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল। তার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হওয়া। এটাই কি আমাদের সমাজের বাস্তবতা? এতিম, দরিদ্র হলে কি তার চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার থাকে না? স্থানীয়রা এই ঘটনায় ব্যথিত হয়ে বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে অথবা বিত্তবান কেউ যদি এগিয়ে আসতেন, হয়তো কুলসুমকে বাঁচানো যেতো। এ মৃত্যু যেন সমাজের প্রতি একটি প্রশ্নচিহ্ন হয়ে থাকে। আল্লাহ যেন কুলসুমকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন। আমিন।#