# জামান আহম্মেদ…………………………………………
বেশ কিছু দিন থেকে জিনিসপত্রের দাম বিশেষ করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে, দাম নীচুমুখী হওয়ার কোন লক্ষণ নেই, কমানোর ইচ্ছেও কারো নেই। আমাদের দেশে মানুষের যথেষ্ট সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলেই দেশের মানুষকে নিজের দেশের উৎপাদিত পণ্য চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে মানুষ না পারলেও খাচ্ছে বা কিনছে। এসবের ব্যপারে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই বললেই চলে। সরকার পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও কেউ মানছে না। সরকার সরকারি কথা বলছে আর ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে চলেছে, তারপরও সরকার কার্ককর কোন ব্যহস্থা গ্রেহণ করছে না বা ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারের নিরবতায় মনে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের সরকার ভয় পায়, যদি ভোট না দেয়। এরকম সাহস ও শংকা নিয়ে দেশ চালানো কি যে কষ্ট তা ভূক্তভোগিরাই জানেন।আমরা জানি বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়েই দেশ পরিচালনা করছে এবং আগামীতেও সততার, নিষ্ঠার সাথে দেশ পরিচালনা করবে গনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। নমনীয় নয় কঠোর হস্তে দমন করতে হবে এসব অনিয়মগুলোকে।
মূল কথা হচ্ছে দেশ চলে গেছে এবং আরো যাবে এদেশের ব্যবসায়ী মহলের হাতে। আর ব্যবসায়ীরা যদি দেশ চালায় তবে তারা দেশের কথার চাইতে নিজের ব্যবসায় লাভবান বা মুনাফার হিসেবটা আগে করবে।তাতে মানুষ খেতে পাক আর না পাক, দেশের লাভ হলো না ক্ষতি হলো তা ভাববার সময় তাদের হতে নেই। তাহলে দেশ কারা পরিচালনা করবে, কাদের হাতে দেশের দায়িত্ব ন্যাস্ত থাকবে বা থাকা উচিত তা জনগণের পাশাপশি সরকারকে ভাবতে হবে গভীরভাবে। এজন্য একটা সুষ্ঠু নীতিমালা থাকা দরকার।যে নীতিমালার পথ ধরে দেশ সামনের দিকে অগ্রসর হবে।দেশের মানুষ এরকম একটি সুষ্ঠু কাঠামো আশা করে।
আসল কথা হলো খাদ্য দ্রব্যের দাম আর কমছে না বরং বেড়েই চলেছে।চাল, ডাল তেলের দামের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে পেঁয়াজ ও আলু, পটল, বেঁগুন, লাউ, কুমড়াও শাক্ সবজি।ভোবুন যে লাল শাক্ ১০টাকা কেজি বিক্রি হতো সেই শাক্ এখন৪০/৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রত্যেক মানুষ একটা অজুহাত খুঁজে আর সে অজুহাতের সুর ধরে িপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম িইচ্ছে মত বাড়িয়ে দেশে সংকট সৃষ্টি করে। আর সে সংকটের কারণে অটোমেটিক পণ্যের দাম বেড়ে যায়। দেশের সকল হিমাগার ও গুদামে এখনও প্রচুর আলু পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে, কিন্তু বাজারে ছাড়ছে চাহিদার চাইতে কম। কারণ একটাই সংকট সৃষ্টি করা। যাতে করে অধিক মুনাফা আয় করা সম্ভব হয়।
পেঁয়াজ ও আলুর দাম এত বেশি হওয়ার কারণ কি কেউ খতিয়ে দেখেছে, দেখ না। যে পণ্যটি দেশের মাটিতে উৎপন্ন হয় সে পণ্যের দাম কি করে এত বেশি হয় তা চিন্তার বিষয়। বর্তমানে পেঁয়াজ ১৫০ টাকা ও আলু ৬০টাকা কেজি দরে বিক্রি হছে খোলাবাজারে এবং পেঁয়াজ ও আলুর দাম আরো বাড়তে পারে বলে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানায়। ভাবতে অবাক লাগে যে আলুর দাম সরকার ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও সে আলু কখনও ৩৬টাকা কেজিতে বিক্রি হয়নি, এখনও হচ্ছে না। তাহলে সরকারের আইনের সঠিক প্রয়োগ হলো কি! কৃষি মন্ত্রী বলছেন যারাই সিন্ডিকেট করছে তারাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার সিন্ডিকেটের কথা স্বীকার করলেও সে সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে পারছে না কেন, এর পিছনে কি রহস্য লুকিয়ে আছে। এ সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে, সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব নির্মূল করতে হবে, নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বচ্ছলভাবে বেঁথে থাকার অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। কেবলই তাহলে আমরা জোর গলায় বলতে পারি দেশ মধ্যমা দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।পিছিয়ে পড়া লোকদের পিছনে ফেলে নয়।
বেশ কিছুদন থেকে কোন জিনিসের দাম দ্বিগুণ, তিনগুণ এমনকি চারগুণ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সে সব পণ্যের দামের কথা বলছিনা, বলছি সেসব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের কথা যেগুলো খেয়ে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের নুন আনতে ফুরায় তাদের কথা বলছি যাদের সর্বনিম্ন আয়ে সংসার চলে, ছেলে-মেয়েকে ডাল ভাত খাইয়ে লেখা পড়া শেখায়, তাদের কি অবস্থা কেউ কি ভেবে দেখেন।পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেলে সব সময় নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের উর্দ্ধগতির খবর ফলাও করে প্রকাশ হচ্ছে। এমন কোন দিন নেই যে পত্র-পত্রিকা বা টিভি চ্যানেলে ব্রড কাস্টিং হচ্ছে না। তারপরও দেশের কর্ণধার ব্যক্তিরা এদিকে কোন নজর দিচ্ছেন না, এটা ঠিক না। আপনি ভাল খাচ্ছেন, আপনার সন্তানেরা ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে, আপনি দামী গাড়ীতে ঘুরছেন বিলাসবহুল এসি লাগানো বাসায় বাস করছেন, অথচ নিচতলার মানুষের খোঁজ খবর নেয়ার সময় নেই। এটাকে কি সভ্য সমাজ, উন্নত দেশ বলে, নাকি অন্য কিছু। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে বসবাস করার নামই সমাজ। এ সমাজের উন্নয়ন মানে রাষ্টের উন্নয়ন, আর রাষ্ট্রের উন্নয়ন তখনি সম্ভব।
দেশে আলু এবং পেঁয়াজ যথেষ্ট পরিমাণ মজুদ রয়েছে আবার নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসছে, তারপরও দাম হু হু করে বেড়েই চলেছে। এর উর্দ্ধগতি লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। শুধু পেঁয়াজ, আলু নয় নিত্য পয়োজনীয় সকল পণ্যের উর্দ্ধগতির বাজারে লাগাম দিতে হবে। তানা হলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ ও নিম্ন আয়ের মানুষের বেহালা অবস্থা আমাদের দেখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার মানুষেরা আর যায় হোক দু’মুঠো ডাল ভাত খেয়ে ভালভাবে দিন কাটাতে পারে সেটা এ সরকারকেই নিশ্চিত করতে হব। এসরকারের কাছে আমাদের চাওয়া পাওয়া ও প্রত্যাশা অনেক বেশি।আমরা সেদিনের অপেক্ষায় রইলাম।#