বিশেষ প্রতিনিধি ছবি সংযুক্ত রাজশাহীর বাঘায় আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা নতুন বছরকে। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে।
বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য, বর্ষবরণ শোভাযাত্রার ইতিহাস ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যর বিষয়টি তুলে ধরে- বাঘা উপজেলা প্রশাসন ও শাহদৌলা সরকারি কলেজের উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ধর্ম, বর্ণ সব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে বাঙালি জাতি নববর্ষকে সাদরে আমন্ত্রণ জানায়। বাঙালি জাতিকে একত্র করে জাতীয়তাবোধে। এ অনুষ্ঠান পরিণত হয় বাঙালির শিকড়ের মিলনমেলায়। স্বৈরাচারের অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে।
সকাল ৯ টায় বর্ষবরন শোভাযাত্রা ও দিন ব্যাপি মেলার উদ্বোধন পরবর্তী বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশনের মাধ্যমে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় গ্রামীণ ঐতিহ্য লাঠি খেলা। লাঠি খেলায় ঢোল বাদক হিসেবে অন্যান্যর মধ্যে অংশ নেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউর রহমান শফি।
অনুষ্ঠানকে প্রানবন্ত করতে দলীয় লোকজন নিয়ে মহিষের গাড়ীতে ঘুরে বেড়ান রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাদ। উপজেলা প্রশাসন কতৃক উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত উৎসবে স্টল ঘুরে দেখা যায়, বাঙালির শিল্প নৈপুণ্য ও সৃজনশীলতার প্রতীক ঐতিহ্যবাহী পণ্য ও হস্তশিল্পের পণ্য কিনে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের সংযুক্ত করেন উৎসবে আসা মানুষ। বিশেষ করে পান্তাভাত, নানা ধরনের পিঠা,ইত্যাদি খাবারের সমাহার ছিল দিনব্যাপি উৎসবে।
পৈত্রিক পেশার ঐতিহ্য ধরে রেখে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের স্টল সাজিয়ে বসেন বাঘা পৌর সভার নারায়নপুর গ্রামের কুশ পাল। স্বপ্ন ছোঁয়া যুব মহিলা সংগঠনের স্টলে গিয়ে দেখা গেলো হাতের নকশিকরা পোষাক। পান্তা ভাত পিঠা পুলির স্টল সাজিয়ে বসেন উপজেলা গার্লস গাইড। তাদের মতো বিভিন্ন পণ্যর ৮টি স্টলের দেখা মেলে নববর্ষ উদযাপন উৎসবে। পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে কাঠের তৈরি খড়ম পায়ে দিয়ে উৎসবে যোগ দেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আফম হাসান।
নববর্ষ অনুষ্ঠানে আসা কলেজ শিক্ষার্থী শান্ত মিঞা বলেন, দাদার কাছে কাঠের তৈরি খড়মের গল্প শুনেছি। উৎসবে এসে নিজ চোখে দেখলাম। এছাড়াও লাঠি খেলা,মাটির তৈরি জিনিসপত্র দেখে ভালো লেগেছে।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও) বলেন,হরেক রকম মেলার দিনও নির্ধারিত ছিল বাংলা সনের হিসেবে। শুধু ফসল আর উৎসব নয়, বাঙালি কৃষকের পারিবারিক ও সামাজিক কাজকর্ম, বিয়েসহ জীবনের সব বিষয়েই বাংলা সন ছিল একক ও অনন্য। সকলের সহযোগিতায় বর্ষবরন উৎসব সুন্দর,সুষ্ঠভাবে শেষ হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভুমি) সাবিহা সুলতানা ডলি,অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফম আছাদুজ্জামান,উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফকরুল হাসান বাবলু, সাবেক সভাপতি সহকারি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাবেক সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম,বাঘা পৌর বিএনপির সভাপতি কামাল হোসেন,সাধারন সম্পাদক তফিকুল ইসলাম,সাবেক সাধারন সম্পাদক সুরুজ্জামান,সাংবাদিক আব্দুল লতিফ মিঞা সহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ-শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শাহদৌলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন,র্যালি শেষে কলেজ চত্বরে আলোচনা সভা সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করেন।
দিবসটি উদযাপনে শোভাযাত্রা করেছে উপজেলা ও বাঘা পৌর বিএনপি। উপজেলার পীরগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয় ২দিন ব্যাপি বৈশাখী মেলার।#