ছবি: মোহন
# মেহেরুল ইসলাম মোহন লালপুর, নাটোর…………………………………….
নাটোরের লালপুরে পৃথক পৃথক ভাবে শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিনের ১৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। ২০০৩ সালের ৬ জুন থেকে দিনটি লালপুরের মানুষের নিকট শোকাহত রক্তাক্ত ৬ জুন হিসেবে খ্যাৎ। এ উপলক্ষে সোমবার(৬ জুন) সকালে পৃথক পৃথক ভাবে নাটোর জেলার অবিসংবাদিত নেতা নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য,৭১ এর বীরাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা শহীদ মমতাজ উদ্দিনের কবর জিয়ারত, নেঙ্গপাড়ায় অবস্থানরত চিরঞ্জীব শহীদ মমতাজ উদ্দিন স্মরণ সৌধে পুস্পস্তবক অর্পন,মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
একদিকে জননেতা শহীদ মমতাজ উদ্দিনের ভাই নাটোর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে কবর জিয়ারত,নেঙ্গপাড়ায় অবস্থানরত চিরঞ্জীব শহীদ মমতাজ উদ্দিন স্মরণ সৌধে পুস্পস্তবক অর্পন,মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী, সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য উপাধ্যক্ষ বাবুল আকতার,গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র রোখসানা মোত্তুর্জা লিলি,লালপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লাবনী আক্তার সহ বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অপরদিকে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন, শহীদ মমতাজ উদ্দিনের ছেলে শামীম আহমেদ সাগর, লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক অংশের সহ-সভাপতি এস্কেন্দার মির্জা,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কাওসার,আ,স,ম মাহমুদুল হক মুকুল,আলাউদ্দিন আলাল,সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল বাশার ভাদু,সাইফুল ইসলাম,মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কাজী আছিয়া জয়নুল বেনু, যুবলীগ নেতা ও বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু,ঈশ্বরদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঈশ্বরদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জয়, লালপুর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বাঘা সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে,গত ২০০৩ সালের ৬ জুন রাত ১০টার দিকে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ উদ্দিন লালপুর উপজেলার গোপালপুর থেকে নিজবাড়ি মিল্কিপাড়ায় ফিরছিলেন। এ এমতাবস্থায় গোপালপুর-সালামপুর সড়কের নেঙ্গপাড়া নামক এলাকায় পথরোধ করে মমতাজ উদ্দিনকে কিছু দুস্কৃতিকারীরা কুপিয়ে হত্যা করে। তার এই অকাল মৃত্যুতে লালপুরের আ’লীগ তথা নাটোর বাসি নেতৃত্বশূণ্য হয়ে পড়ে। পরে জনপ্রিয় এই বর্ষিয়ান নেতাকে হারিয়ে নাটোর-১ আসনের লালপুর-বাগাতিপাড়ার আ’লীগ ও তার সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে নেমে আসে এক অন্ধকারের ছায়া।
পরের দিন ২০০৩ সালের ৭ই জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বর্তমান গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিনের স্মরণে উপজেলার করিমপুর সরকারী হাই স্কুল মাঠে এক স্মরণ সভা করেন। পরে যে স্থানে শহীদ মমতাজ উদ্দিন কে হত্যা করা হয় সেই স্থানে তার স্মৃতির স্মরণে চিরঞ্জীব শহীদ মমতাজ উদ্দিন নামে একটি স্মরণ সৌধ তৈরী করা হয়।
তৎকালীন ২০০৪ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ আ’লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল উক্ত স্মরণ সৌধটি উদ্বোধন করেন। এর পর থেকে প্রতিবছর ৬জুনে লালপুর-বাগাতিপাড়া উপজেলার আ’লীগও তার সহযোগি অঙ্গ সংগঠন এবং শহীদ মমতাজ উদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ,মিলাদ মাহফিল, বিশেষ মোনাজাত, স্মরণ সভা, কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে এই দিনটি পালন করে আসছে।
এদিকে আজ পর্যন্ত লালপুর-বাগাতিপাড়ার আ’লীগ ও তার সহযোগি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগন সেই রক্তাক্ত ৬ জুনের ঘটনা আজও ভুলতে পারেন নি। মমতাজ উদ্দিন আজও বেঁচে আছেন লালপুর-বাগাতিপাড়া বাসীর হৃদয়ে,আর এভাবেই মমতাজ উদ্দিন মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল। অপরদিকে শহীদ মমতাজ উদ্দিনের স্মৃতিকে ধরে রাখতেই তার স্নেহের ছোট ভাই নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি (সাবেক) ও নাটোর-১ আসনের সাবেক সংসদ এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ ২০১৬ সালে শহীদ মমতাজ উদ্দিনের নামে ফাউন্ডেশন গঠন করে। শহীদ মমতাজ উদ্দিন ১৯৮৬-১৯৮৮ সালে তৃতীয় জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য ছিলেন।এছাড়াও তিনি নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র নেতা ফজলুর রহমান পটলের নিকট পরাজিত হন। পরে ২০০৩ সালের ৬ জুন বিএনপি লালিত সেই ফজলুর রহমান পটলের ইশারায় দুষ্কৃতিকারীদের কবলে পড়ে তার অকালে মৃত্যু হয়।#
এডিট: আরজা/০১