মমিনুল ইসলাম মুন…………………………………………
রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার সনাতনধর্মালম্বী পরিবারের কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বদলগাছী যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা মিঠুনের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, অতঃপর অস্বীকার। এদিকে প্রশাসনের দায়িত্ব অবহেলার কারণে নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার পারইটুনি গ্রামে প্রেমিক মিঠুনের বাড়িতে অনশনে বসেও ওই কলেজ ছাত্রী মিঠুনকে বিয়ে করতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার পারইটুনি গ্রামের বিমল মন্ডলের পুত্র মিঠুন মন্ডল মুঠো ফোনের সুত্রধরে বেসরকারি কলেজ পড়ুয়া ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে মিঠুন ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। কিন্ত্ত মিঠুনকে বিয়ের চাপ দিলে সে হঠাৎ করেই ওই ছাত্রীর সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
এদিকে বাধ্য হয়ে ওই কলেজ ছাত্রী বিয়ের দাবিতে মিঠুনের বাড়ির দরজায় অনশনে বসে। গত ১ অক্টোবর শনিবার থেকে ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার পর্যন্ত একটানা ৪দিন অনশন করেন। কিন্তু দূর্গাপুজা এবং মিঠুন সরকারি চাকরিজীবীর দোহায় দিয়ে মান্দা উপজেলা প্রশাসন ভিকটিমের ইচ্ছের বিরুদ্ধে ২ দিনের মধ্যে সমাধানের কথা বলে তাকে তানোরে পাঠিয়ে দেন। ভিকটিমের পরিবার স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, এই ঘটনাটি নিয়ে মিঠুনের দোলাভাই তানোরের কামারগাঁ ইউপির কচুয়া সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিখিল চন্দ্র ও তার ভাই দারোগা টাকা নিয়ে আপোষের জন্য ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন। ভিকটিমের কথা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মিঠুন তাকে স্ত্রীর মত ব্যবহার করেছে, এখন একটাই সমাধান মিঠুনকে বিয়ে করতে হবে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, সরকারি চাকরিজীবী মিঠুনকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মান্দা থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা। অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার মিঠুনের দোলাভাই নিখিল চন্দ্র বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঘটনা মিমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ভিকটিম প্রেমিকা জানান, মিঠুন তাকে বিয়ে করবে, তবে দোলাভাই নিখিল তাকে ভাগিয়ে দিয়েছে। শুধু নিখিলের কুপরামর্শে বিয়ে হয়নি। তিনি অনশনে থাকা অবস্থায় মান্দার ইউএনও, এসিল্যান্ড ও পুলিশের লোকজন মিঠুনকে ২ দিনের সময় দিয়েছেন।
এবিষয়ে মাস্টার নিখিল চন্দ্র জানান, ৬ মাস থেকে তাদের সম্পর্ক। মেয়ে যখন অনশন করে, তখন প্রশাসন বলেছিল নামমাত্র বিয়ে করে তিন চার মাস পর ডিভোর্স দিয়ে দিবেন। এবিষয়ে প্রেমিকা ওই শিক্ষার্থী জানান, অনশন করা অবস্থায় ইউএনও, এসিল্যান্ড এবং পুলিশের লোকজন পূজা উদযাপনে সবাই ব্যস্ত বলে তার পরিবারকে ৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবারের মধ্যে সমাধান করতে সময় দেয়া হয়। কিন্তু ৭ অক্টোবর সারাদিন অতিবাহিত হলেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নিখিল মাস্টার কিছুই হতে দিচ্ছে না।
এবিষয়ে নওগাঁ বদলগাছি উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জানান, এমন ঘটনা শুনেছি, আমরা চরম বিব্রত ও লজ্জিত। তবে, কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে নওগাঁ জেলার মান্দা থানার ওসি শাহিনুর রহমানের সরকারি মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি। একারণে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে নওগাঁ জেলার যুব উন্নয়ন অফিসের উপ-পরিচালক জাবেদ ইকবাল জানান, লোকমুখে শুনেছি। অভিযোগ না পেলে কিভাবে ব্যবস্থা নিব। মান্দার ইউএনও এবং ওসির ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে শুনেছি। এবিষয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক জানান, পবিত্র দূর্গাপূজার জন্য ২ দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। কারণ ছেলে ও মেয়ে উভয় হিন্দু সম্প্রদায়ের। এজন্য সময়টা দেয়া হয়। যদি সমাধান না হয় মেয়ে অভিযোগ করলে সব ধরনের সহযোগিতা ছাড়াও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ইউএনও।
এবিষয়ে নওগাঁ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) রাসেদুল হকের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে থানার ওসির মোবাইল ফোন রিসিভ না হওয়া প্রসঙ্গে এসপি জানান, পুনরায় ওসিকে ফোন দেন। কেন সরকারি ফোন রিসিভ করবেন না ওসি। তবে, এমন ঘটনা তাঁর অজানা বলে জানান এসপি।#