মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীতে ধানের জমিতে হাঁস ঢোকাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পারিবারিক বিরোধ থেকে ঘটে যাওয়া ভাইয়ের হাতে ভাই খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মামলার অন্যতম আসামি মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজু (৫০)–কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৫।
শনিবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫, রাজশাহীর সদর কোম্পানির একটি অভিযানিক দল মহানগরের মতিহার থানার অন্তর্গত ধরমপুর গ্রামে সফল অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। র্যাব সূত্র জানায়, নিহত আমিরুল মোমিন (৪০) রাজশাহীর দামকুড়া থানার আলিমগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি একজন কৃষক ছিলেন। গত ২১ জুলাই বিকেলে পারিবারিক বিরোধের সূত্রপাত ঘটে যখন তার বাড়ির দুটি পাতিহাঁস সৎ ভাই মিজানুর রহমানের ধানক্ষেতে প্রবেশ করে চারাগাছ ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়, যার জেরে ঘটনার তিন দিন পর, ২৪ জুলাই বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে ১০–১১ জন অস্ত্রধারী আমিরুলের বাড়ির সামনে হামলা চালায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলার ১নং আসামি রয়েলের উসকানিতে হামলাকারীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আমিরুল ও তার ভাইয়ের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। আমিরুল প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির ভেতরে আশ্রয় নিলেও পেছনের দরজা ভেঙে হামলাকারীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা ছুটে এলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ২৫ জুলাই দামকুড়া থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪–৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই র্যাব-৫ ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে মামলার ১ থেকে ৫ নম্বর আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করে। সর্বশেষ অভিযানে ৬ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি মিজানুর রহমানকেও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব। তাকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দামকুড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তারা সন্ত্রাস, খুন, অপহরণ, অবৈধ অস্ত্র ও অন্যান্য অপরাধ দমনে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব সব সময়ই তৎপর ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।