# মমিনুল ইসলাম মুন………………………….
রাজশাহীতে গত ১৫ দিনের ব্যবধানে বেড়েছে চাল, আটা ও তেলের দাম। এছাড়া এক সপ্তাহের ব্যবধানে খাশির মাংস কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। শুক্রবার (২৬ আগষ্ট) রাজশাহীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে চাল, ও আটা কেজিতে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ সপ্তাহে আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা কেজি যা গত দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৫৭ টাকায়, গত দুই সপ্তাহ আগে মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৬৩ টাকা যা এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা, গত সপ্তাহের থেকে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা এবং ৫ টাকা বেড়ে আউশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে।
চাল কিনতে আসা গৃহিণী আফরোজা বানু জানান, প্রতিনিয়ত চালের দাম বাড়তেই আছে আমরা গরিব মানুষ এভাবে চাউলের দাম বাড়লে কেমন করে সংসার চালাব। আমার মতো যাদের বড় সংসার আর আয়ের মানুষ একজন আমরা তারা চালের দাম বৃদ্ধির কারণে খুব কষ্টে জীবন-যাপন করছি।
চাল ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারনে, আমদানিও কমে গেছে । তাই চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে চাউলের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আঠালো চালের দাম। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়, আর ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা লিটার। এ সপ্তাহে গরুর মাংশের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে খাশির মাংশের দাম। ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে খাশির মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজিতে।
এছাড়া এ সপ্তাহে কিছু মাছের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বৃদ্ধি পেয়েছে রুই, সিলভার, মিরকা ও কাতল মাছের। বড় ইলিশ গত সপ্তাহের চেয়ে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১হাজার ৭শ’ টাকা কেজিতে, ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা, ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেশিতে সিলভার মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকা, কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে মিরকা মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা ও ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি দরে।
মাছ ক্রেতা মামুন জানান, প্রতি সপ্তাহে মাছ কিনতে আসলে দেখছি মাছের দাম কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বৃদ্ধি। এভাবে যদি প্রতি সপ্তাহে মাছের দাম বৃদ্ধি পায় তাহলে নিম্ন আয়ের মানুষ মাংশের মতো মাছ ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। মাছ কিনতে আসা গৃহিণী লিজা আক্তার জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে মাছের দাম আবার বেড়ে গেছে। কিছু বলার নেই যেখানে দুই কেজি মাছ কিনতাম সেখানে হয়তো এককেজি কিনবো।
মাছ বিক্রেতা জয়নাল জানান, বৃষ্টি ও মেঘের কারণে জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। যার কারণে বাজারে মাছ কম আসছে। আর আমদানি কম থাকার কারণে আমরা চাহিদা অনুযায়ী মাছ সরবরাহ করতে পারছি না তাই মাছের দামটা বেশি। অন্যদিকে বাজার ঘুরে দেখা যায় মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কম। এ সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ২৫ টাকা কমে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা, ১০ টাকা কমে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহের চেয়ে ২ টাকা কমে লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা এবং সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকা হালিতে।
এ সপ্তাহে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির বাজার। কিছু কিছু সবজির দাম কমেছে বলেও জানান সবজি ব্যবসায়ীরা। পূর্বের মূল্যে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৮০, করলা ৬০, আলু ২৫, ২০ টাকা কমে শসা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, ২০ টাকা কমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ এবং কেজিতে ১০০ টাকা কমে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও এ সপ্তাহে স্থিতিশীল রয়েছে মুদিসামগ্রী পণ্যের বাজার। মুদিপণ্যের সব পণ্যের দাম পূর্বের মতোই রয়েছে।
এভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দেশে খেটে খাওয়া মানুষগুলো বড়ই বেকায়দায় পড়ে যাবে।দেশে দেখা দিবে খাদ্যাভাব, একমুঠো ভাতের জন্য মানুষ ছুটোছুটি করবে।কারা খাদ্য দ্রব্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছে, কেনই বা এমনটি করছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। সিন্ডিকেটের মুলহোতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। তানা হলে সরকারের ভাবমূতি দারুনভাবে ক্ষুন্ন করবে, এটা হতে দেয়া যায় না। দেশবাসি মনে করছে খুব শিগগিরই সরকার খাদ্য দ্রব্যের দাম কমিয়ে সহনীয় পযায় এনে চলমান সংকট উত্তোরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।#