# মমিনুল ইসলাম মুন, বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি……………………..
রাজশাহীর তানোরে আটককৃত মোটরসাইকেল থানা থেকে গায়েব হয়ে গেছে। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের মালিক বেলাল হোসেন ওরফে বুলু সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে তানোর থানার ওসি এবং এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ সময় পুলিশ সুপার না থাকায় তার অফিস কার্যালয়ের কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল সাহাদাৎ হোসেন রিসিভ করে অভিযোগপত্র জমা নিয়ে টু কপিতে স্বাক্ষর দেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, তানোর পৌর এলাকার বুরুজ মহল্লার বাসিন্দা মৃত লোকমান হাফেজের পুত্র বেলাল হোসেন বুলু (৩৯) সম্প্রতি ৩ মার্চ সন্ধ্যায় তার মোটরসাইকেল চালিয়ে কাশিমবাজার থেকে তানোর সদরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পথের মধ্যে জিওল-চাঁদপুর নামক মোড়ে মনজিলা নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে তার চলন্ত মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে। এতে মনজিলা সামান্য আহত হন। পরে বেলাল হোসেন তাকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করান। এরই মধ্যে তানোর থানা পুলিশ এমন দুর্ঘটনার খবর পায়। পরে থানা থেকে মানিক নামে এক এসআই ঘটনাস্থলে গিয়ে বেলাল হোসেনের মোটরসাইকেল জব্দ করে থানা হেফাজতে নেন।
এ ঘটনার কয়েক মাস পর গত ২৪ জুন সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় কাউন্সিলর মনজুর রহমান এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক বসান। সালিশে চিকিৎসা খরচ বাবদ আরও ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি আপস-মীমাংসা করা হয়। বেলাল হোসেন জানান, কাউন্সিলরের মীমাংসাপত্র নিয়ে ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে থানায় যান তিনি। সঙ্গে তানোর পৌরসভার নারী কাউন্সিলর মমেনা আহম্মেদ ও তার ভাই আলফাজ উদ্দিন ছিলেন। এ সময় জব্দকৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধারের ব্যাপারে তানোর থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়াকে অবগত করে মোটরসাইকেল ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। তাদের এমন অনুরোধে ওসি জানান, মানিক এসআই থানায় নেই। অন্যত্র বদলি হয়ে গেছে। আপনি মোটরসাইকেলটি নিতে চাইলে মানিক এসআইকে নিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও আপনার মোটরসাইকেলের ব্যাপারে আমি অবগত নই।
ওসির এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে বেলাল বলেন, থানা চত্বরে তার মোটরসাইকেলটি দেখতে পাচ্ছেন তিনি। তখন ওসি জানান, ঠিক আছে খোঁজখবর নিয়ে দেখি ১৫ দিন পরে আসেন। ওসির কথামতো ১৫ দিন পরে পুনরায় থানায় গিয়ে মোটরসাইকেলটির ব্যাপারে বললে তিনি রাগান্বিত ও উগ্র মেজাজে বলেন, এসআই মানিককে নিয়ে এসে মোটরসাইকেল নিতে হবে। আমি এ বিষয়ে কোনো কিছুই অবগত নই। এ ব্যাপারে বেশি বাড়াবাড়িতে গেলে মোটরসাইকেলটি চিরতরে হারাবে বলে হুমকি দেন ওসি। এছাড়াও এ বিষয়ে কোনো কিছুই বলতে বাধ্য নই বলে আপমান-অপদস্থ করে থানা থেকে তাদের তাড়িয়ে দেন ওসি।
ফলে নিরুপায় হয়ে তার মোটরসাইকেল উদ্ধারের ব্যাপারে ওসি এবং এসআইয়ের বিরুদ্ধে এসপির কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান বেলাল হোসেন। এ বিষয়ে তানোর থানার তৎকালীন এসআই মানিক মোবাইলে বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে জিডি করে জব্দ তালিকায় মোটরসাইকেলটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে তানোর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, এসআই মানিক এমন মোটরসাইকেল আটকের ব্যাপারে তাকে অবগত করেননি। তবে থানাতেও তার মোটরসাইকেল আছে বলে জানা নেই। যদি থানায় এমন মোটরসাইকেল জব্দ থাকে কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#