ধামইরহাট (নওগাঁ)প্রতিনিধি………………………….
নওগাঁর ধামইরহাটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সরকারী অর্থ আতœসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দূর্নীতির বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের অর্থ দিয়ে গ্যাসের চুলাক্রয়, মোটর পাম্প পানির ট্যাঙ্কিসহ চুরি করে বিক্রি, অর্থআতœসাৎসহ শত অভিযোগ প্রধান শিক্ষক আরশেদা খাতুনের বিরুদ্ধে। সরকারী সম্পদ বিক্রি, বিদ্যালয়ের বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ, এলাকাবাসী ও অভিভাবক ওই প্রাধান শিক্ষকের অপসারণ সহ বিভাগীয় শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাহারুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, উপজেলার ৬৫ নং রামরামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরশেদা খাতুন বিদ্যালয়কে নিজের বাড়ীর মত ব্যবহার করেন। সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণ, বিদ্যালয়ের জমি দাতা বর্তমান সভাপতি’র পিতাকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য পেশ করেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পরামর্শ ও মতামত না নিয়ে বিদ্যালয়ের টাকা দিয়ে যেনতেন ভাবে কাজ করে সম্পূর্ণ টাকা খরচের হিসাব দিয়ে অবশিষ্ট টাকা আতœসাৎ করেন। বিদ্যালয়ের পানির ট্যাঙ্কি এবং পানির পাম্প (মোটর) সবার অজান্তে চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করে সেই টাকা আতœসাৎ করেন। উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার উপযোগী অনেক দরিদ্র পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের না দেওয়ায় অভিভাবকবৃন্দ প্রধান শিক্ষকের উপর ক্ষিপ্ত।
প্রধান শিক্ষক আরশেদা খাতুন নিয়মিত স্কুলে না যাওয়ায় এবং সরকারি বিভিন্ন কাজ কর্মের অযুহাত দেখিয়ে অফিস ফাঁকি দেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় তার কোন চিন্তা-ভাবনা নেই, সব সময় থাকেন উদাসীন। মাসিক মিটিং তিনি প্রয়োজন মনে করেন না। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের জন্য সিলিপের টাকা নিজের পছন্দের লোকজন দিয়ে মিটিং ও রেজুলেশন ছাড়াই খরচ করেন। বর্তমান কমিটির মেয়াদ আগামী ০৯/১০/২০২২ পর্যন্ত থাকলেও নিজের অনিয়ম ও দূর্নীতিকে ঢাকতে গত ২২/০৬/২০২২ তারিখে কমিটির মেয়াদ শেষ বলে ঘোষনা করেন।
এমন বিস্তর অভিযোগের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, সকল অভিভাবক ও কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং এলাকাবাসী এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন ও উত্তেজিত, অভিভাবক ও এলাকাবাসী তার অপসারণসহ বিভাগীয় শাস্তির দাবীতে গণস্বাক্ষর করেছেন এবং জেলা প্রশাসক, দুদক, এন,এস.আই, জেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ও শিক্ষা অফিসারে দৃষ্টি আকর্ষণ করে উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন কমিটির সভাপতি। খুবই শ্রীঘ্রই গ্রামবাসী মানববন্ধনও করবেন বলে জানান অভিযোগকারী।
২০২১-২২ অর্থ বছরে সিলিপের ২২ হাজার টাকা আতœসাৎ, বিজয় ফুল উৎসব, আন্তঃক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও এমনকি জাতীয় শোক দিবসের নামে নাম মাত্র খরচ দেখিয়ে মোটা অংকের টাকার ভাউচার প্রদান করেন। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের টাকা দিয়ে গ্যাসের চুলা ক্রয় করে নিজের কাজে ব্যবহার করে থাকেন। বিদ্যালয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার বিজয় দিবসে উপস্থিত হলে তাদের বসতে না দিয়ে অসম্মান করেন। সিলিপের টাকা দিয়ে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের পোশাক বানানোর সিদ্ধান্ত হলেও তাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক আরশেদা খাতুন চাঁদাও নিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আরশেদা খাতুন বলেন, ‘সিলিপের টাকা দিয়ে স্কুল ড্রেস দিতে গেলে সবাই গরীব সাজবে তাই ড্রেস কিনে দেইনি, আর সভাপতি আমার বিরুদ্ধে যে সব অর্থ আতœসাৎ ও অনিয়মনের অভিযোগ করেছেন আসলে তা নয়, সকলের সাথে আমার সু-সম্পর্ক আছে।
প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও ধামইরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান আজাহার আলী মন্ডল বলেন, আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#