আবুল কালাম আজাদ…………………………………………………………………
শীতকাল মানেই বাঙালির পিঠা-পুলির উৎসব।শীতের পিঠা-পুলি বাঙালির আদি খাদ্যসংস্কৃতির অংশ, যা বাংলার চিরায়ত লোকজ খাদ্যসংস্কৃতিতে পিঠা-পায়েস একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।পৌষেরহিমেল হাওয়া ছাড়া যেমন শীতকে কল্পনা করা যায় না, ঠিক তেমনি পিঠা ছাড়াও বাঙালির ঐতিহ্য ভাবা যায় না।
শীতকালে দেশজুড়ে পিঠা তৈরির ব্যস্ততা চোখে পড়ে।বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে প্রতিটা বাড়িতে বাড়িতে ধুম পড়ে যায় পিঠা তৈরিতে।অনেকে আবার শহর থেকে ছুঁটে আসেন গ্রামে মায়ের হাতের তৈরি পিঠা খেতে-মা যেমন মমতাময়ী তেমনি মায়ের হাতের তৈরি পিঠা গুলো ও হয় সুস্বাদু-মজাদার।
পিঠা-পুলি বাঙালির যেমন খেতে পছন্দ করেন-তেমনি চাহিদার রুচি থেকে যায় পিঠা পুলিতে।
রাজশাহী নগরীর ৯০ বছরের আব্দির করিম বলেন-শীতকাল মানে হল গরম গরম পিঠার আয়োজন,গরম পিঠা খেতে সবাই ভালোবাসেন।আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের কে সাথে নিয়ে একসাথে গরম পিঠা খেতে আমার খুব ভালো লাগে।তাছাড়া আমি শীতে যেসব পিঠা খেতে পছন্দ করি-ভাপা পিঠা,পাঠি ছাপটা,কলা পিঠা, চিতই পিঠা ইত্যাদি।তবে গ্রাম-বাংলার সেই রসাল পিঠা-পায়েস এখন হারিয়ে যাচ্ছে।আজকাল আমাদের খুব পিঠা খেতে ইচ্ছে হলে ছুটে যাই পিঠার দোকানে।কিন্তু আমরা যদি একটু কষ্ট করে ঘরে পিঠা তৈরি করি, তবে তার আনন্দ কিন্ত অনেক বেশি।
নগরী পিঠা বিক্রেতা শেফালী বেগম বলেন- একেক পিঠার স্বাদ একেক রকম আমার কাছে চিতই পিঠা স্বাদ অন্যরকম তাই আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি চিতই পিঠা খেতে।পিঠা একেক এলাকায় একেক নামে পরিচিত! যেমন তেল পিঠাকে উত্তরবঙ্গের অনেক এলাকায় বলে পাকান পিঠা বলে থাকে।বাংলাদেশে বেশি প্রচলিত পিঠার মধ্যে রয়েছে ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, চিতই পিঠা, রস পিঠা, ডিম চিতই পিঠা, দোল পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, পাকান, আন্দসা, কাটা পিঠা, ছিটা পিঠা, মুঠি পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, চাঁদ পাকান, সুন্দরী পাকান, সরভাজা, পুলি, পানতোয়া, মালপোয়া, মেরা পিঠা, মালাই, কুশলি, ক্ষীরকুলি, গোলাপ ফুল, লবঙ্গ লতিকা, ঝালপোয়া, সূর্যমুখী, নারকেলি, সিদ্ধপুলি, ভাজা পুলি, দুধরাজ ইত্যাদি।শীত কালে পিঠার পাশাপাশি আরো একটি মজার খাবার হলো খেজুরের গুড়ের পায়েস। শীতকালে এই মজাদার আইটেমটি মিস হয়ে গেলে মনে হয় শীতের মূল আনন্দটাই যেন অপূর্ন থেকে গেলো।#