নিজস্ব প্রতিনিধি, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা…………………………………………………
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ১০ নং আটুলিয়া ইউনিয়নের ০১ নং ওয়ার্ডে রওশনারা বেগম (৪৫) নামে এক অসহায় গৃহবধূ সহ তার পরিবারকে নওয়াবেকীর বাজারে বেধড়ক মারধর করে তাকে প্রকাশ্যে জোরপূর্বক জুতার মালা পরিয়ে পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে জোরপূর্বক জুতার মালা পরানোসহ পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চাঞ্চল্যকর সেই ভিডিওর দৃশ্য ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলেও অপরাধীরা ক্ষমতাধর হওয়ায় রহস্যজনকভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী ঐ নারী।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের ভাই অর্থের জোরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে এলাকায় বর্তমানে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন অত্র অঞ্চলের মানুষ। ঘটনাটি দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ভুক্তভোগী ঐ নারী স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনের চাপে চরম অবহেলায় পরিবার সহ অসুস্থভাবে দিনাতিপাত করছে। অপরাধীদের হুমকিতে তার পরিবার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত সহ আইনগত সুবিচারের দাবিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনায় আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে দেখে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও ভীতি কাজ করছে।
জানাগেছে, ভুক্তভোগী ঐ নারী অত্র ইউনিয়নের ০১ নং ওয়ার্ডের পূর্ব বিড়ালাক্ষী গ্রামের দিনমজুর মোঃ ইমদাদুল সরদার এর স্ত্রী এবং একই অঞ্চলের ফজলু সরদার এর মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি গত ২১/০৯/২৩ ইং তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার। ভুক্তভোগী জানান, সুবিচারের আশায় ঘটনাটি প্রথমে ১০ নং ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু সালেহ বাবু ও ০১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আখতারুজ্জামান লিটিলের ভাই মোঃ মনিরুজ্জামান সানাকে জানালে অপরাধীরা দলীয় লোক হওয়ায় তারা কিছুই জানেন না, কিছুই করার নেই বলে এড়িয়ে যান।
পরবর্তীতে শ্যামনগর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ওসি সাহেবের কথায় অভিযোগ দায়ের করলে উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে থানা পুলিশ ০১ নং আসামি মোঃ রবিউল ইসলাম সহ আরো তিনজন কে আটক করে থানা হাজতে রাখে। ঐ ঘটনায় পরবর্তীতে ঐ নারীকে ইউপি চেয়ারম্যান ও মনিরুজ্জামান সানার লোক ওসি সাহেব থানায় ডাকছে এই মর্মে থানায় ডেকে নিয়ে মামলা না নিয়ে তাকে বিবাদীরা একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে হয়রানি করবে এমন ভয়-ভীতি দেখিয়ে কৌশলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও তাদের শেখানো বক্তব্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে অভিনব কায়দায় ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে।
এমন চাঞ্চল্যকর বক্তব্য দিয়ে পুনরায় এই ঘটনা ধামাচাপা বন্ধ করতে এবং নিজের পরিবারের সদস্যদের উপর ঘটে যাওয়া জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত সকল অপরাধীদেরকে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগীরা ঐ নারী রওশনারা বেগম।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাদিনীকে আমরা অনেকবার মামলা দেয়ার জন্য বলেছি কিন্তু উনি মামলা করতে চায়নি। ভিকটিম যদি মামলা করতে ইচ্ছুক থাকে থানায় এজাহার দিলে আমরা অবশ্যই মামলা নেব।#