নাজিম হাসান, রাজশাহী…………………………………………..
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় লাইসেন্স বিহীন নতুন নতুন ফার্মেসির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। একশ্রেনীর অসাধু ঔষধ ব্যবসায়ী শহর থেকে শুর¤œ করে গ্রামের আনাচে কানাচে ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন ঔষধের ব্যবসা অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফার্মাসি চালু করার জন্য সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক হলেও তা মানা হচ্ছে না। অল্প শিক্ষিত ও ওষুধ সম্পর্কে সীমিত ধারণাসম্পন্ন লোকবল দিয়েই চলছে এসব ফার্মাসির ব্যবসা। এবিষয়ে জেলা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে। এ সুযোগে উপজেলার সদর ও গ্রাম অঞ্চলে লাইসেন্স বিহীন ঔষধের দোকান দিন দিন বেড়েই চলছে। ফলে ভোগামিত্মর শিকার হচ্ছে গ্রামের জনসাধারন। এছাড়া বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানী থেকে স্যামপুল ঔষধ ও বাকিতে ঔষধ ক্রয়-বিক্রয়ের সুযোগ থাকায় অনেকটা অল্প পুঁজিতেও ব্যবসা করতে পারছে ফার্মেসিগুলো। এ কারণে উপজেলার জনবহুল বিভিন্ন এলাকাগুলোতে খুব সহজেই গড়ে উঠছে নতুন নতুন ফার্মেসী।
এলাকাবাসি সৃত্রে জানা গেছে, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ফার্মেসি। আর এসব ফার্মেসি মালিকদের প্রাতিষ্ঠানিক কোন স্বীকৃতি না থাকলেও ডাক্তারদের মতোই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। ফলে অনেক রোগীর জীবন হচ্ছে বিপন্ন। ভোক্তাদের প্রয়োজন আর চাহিদা বুঝে ফার্মেসি মালিকদের অনেকে প্রায় ঔষুধের অযৌক্তিক দাম আদায় করছেন। আবার অনেক রিপ্রেজেন্টেটিভরা দোকানিকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে নিজেদের ওষুধ বাজারজাত করতে তৎপর থাকেন। যার কারণে পুরনো ফার্মেসি মালিকদের অনেকেই মুনাফার কারসাজিতে বেশ অভিজ্ঞ। সে কারণে চিকিৎসার নামে ঔষধ দিয়ে সাধারণ রোগীদের কাছ থেকে নানা কৌশল অবলম্বন করে লাভও করতে পারছেন। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা এলাকায় প্রায় ২শতাধিক ঔষধ বিক্রেতা থাকলেও বৈধভাবে (লাইসেন্স পাওয়া) বিক্রেতার সংখ্যা সিমিত।
উপজেলার সদরসহ তাহেরপুর পৌরসভায় কয়েকটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ঔষদ বিক্রেতার ফার্মেসিতে চিকিৎসক থাকলেও অন্যরা রাখেন না। কিন্তু অনেকে বড় ব্যানারসাইনবোর্ড টাঙ্গীয়ে বা বড় কোন ডাক্তারের নাম ভাঙ্গিয়ে তারা ঠিকই দোকান চালাচ্ছে। ফলে প্রায় প্রতিটি দোকানের ব্যানার-সাইনবোর্ড দেখে মনে হবে এখানে বড় কোন ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু আদৌ কোন ডাক্তার বসে কি না সন্দেহ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফার্মেসির মালিক ঔষদ বিক্রি করতে বা কোন ক্ষেত্রে এলএমএএফ নামধারী স্বল্প মেয়াদী ট্রেনিং নিয়ে নিজেদের এলাকায় ডাক্তার হিসাবে পরিচয় দিয়ে রোগীদের ডাক্তারের কাছে না পাঠিয়ে নিজেরাই চিকিৎসা দিয়ে থাকে। এবং গ্রামাঞ্চলের নিরীহ সরল সোজা মানুষরা ছোট-খাট অসুখে অনেক সময় সুচিকিৎসা লাভের আশায় কখনও ভিজিটের ভয়ে রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তারের কাছে না গিয়ে সরাসরি ফার্মেসিতে গিয়ে রোগের বর্ণনা দিয়ে ঔষধ চান। আর এই ক্ষেত্রে ঐসব নামধারী ডাক্তারের দেওয়া উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবনের ফলে হিতে বিপরীত ফল হয় প্রতিনিয়ত। ফলে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে আরও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন রোগীরা। এতে আর্থিক শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক রোগী ও তাদের পরিবাররা।
একটি সুত্র জানায় একশ্রেণীর ফার্ম্মেসী মালিক নিজেদের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার নামে অপচিকিৎসা করছেন। আবার অধিকাংশ ফার্ম্মেসীতে মেয়াদোত্তীর্ণ যৌনউত্তেজক ও নেশা জাতীয় ওষুধ বিক্রি করছেন। একশ্রেণীর ফার্ম্মেসী মালিক স্বাস্থ্য অসেচতন সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার নামে করছেন রমরমা ব্যবসা বাণিজ্য। তাঁরা জীবনরক্ষাকারী ওষুধের নামে প্রতিদিন ক্ষতিকর ওষুধ অবাধে বিক্রি করছে। অল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফা হওয়ায় এলাকার যুবকরা এই ফার্ম্মেসী ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন বাড়ছে ফাম্মের্সীর সংখ্যা। অন্যদিকে ফার্ম্মেসীগুলোর লাইসেন্স না থাকায় সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।#