তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি………………………………………………
রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভার আলোচিত ময়েনপুর আলীতলা দাখিল মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের (এমপিও) বেতন বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বলে গুঞ্জন উঠেছে। চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় পাশের হার শূণ্য হওয়ায় এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। যা ‘ফল বিপর্যয়’ বলে মনে করছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। এ কারণে ইতোমধ্যে এই মাদরাসার সুপারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করেন, তবে ১২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্ত্ত পরীক্ষায় একজনও কৃতকার্য হতে পারেনি পাশের হার শূণ্য।
সুত্র জানায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশে ফলাফল উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ময়েনপুর আলীতলা মাদরাসায় দাখিল পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়ের কারণে অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। যা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার ৫.৪ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক-কর্মচারীগণের এমপিও সাময়িক স্থগিত বা স্থায়ীভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন গ্রহণ করা হবে না, তা আগামি ১৫ দিনের মধ্যে এর জবাব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ দর্শানো চিঠির অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে।
এদিক আলীতলা দাখিল মাদরাসার শিক্ষকদের এমপিও বন্ধের দাবি করে গত ১ আগষ্ট মঙ্গলবার প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকাবাসীর স্বাক্ষর সংবলিত লিখিত অভিযোগ ডাকযোগে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। এবছর প্রতিষ্ঠান থেকে একজনও শিক্ষার্থী পাশ না করাই ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।
অভিভাবকগণ প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে করে বলেন, মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের পিছনে প্রতিমাসে সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছেন। অথচ তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত না হয়ে সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকছে। আবার যদি মাদরাসায় উপস্থিত হন তাহলে পাঠদান না করিয়ে রাজনৈতিক চর্চা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কম্পিউটার ও বিজ্ঞান শিক্ষার উপকরণ নেই, হয় না ক্লাস। অন্য শিক্ষকেরাও নিয়মিত ক্লাস করায় না। প্রতিষ্ঠানে এসে বসে আড্ডা দিয়ে চলে যায়। তবুও দেখার কেই নেই। দিনের পর দিন এভাবে চলছে মাদরাসার কার্যক্রম। তারা বলেন, তাদের ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যত বলে কিছুই নেই এই প্রতিষ্ঠানে। অভিভাবকগণ আমরা সরকারের কাছে দাবি করছি এমন প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধসহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।
এবিষয়ে মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল হক বলেন, আমরা খুবই মর্মহত। এই ব্যাচে কিছু ছাত্রীর বিবাহ হয়ে শশুর বাড়ি চলে গিয়েছিল এবং ছাত্ররা রাজমিস্ত্রি কাজে ঢাকায়। তাদের ক্লাশে না পাওয়ায় পড়াশুনা কম হয়েছে বলে স্বীকার করেন মাদরাসা সুপার। তবে আগের কয়েক বছর এই প্রতিষ্ঠানের ফলাফল ৯০ ভাগ পাশ করেছে বলে জানান তিনি। তবে এসব বিষয়ে পত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।
তিনি আরো বলেন, ৩১ আগষ্টের মধ্যে শোকজ এর জবাব দিতে বলা হয়েছিল, তার আগেই মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে গিয়ে শোকজ এর জবাব দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, আলিতলা দাখিল মাদরাসায় কেউ পাশ করতে পারেনি এটা সত্য। তাদের মাদরাসা না থাকায় ভাল। আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো বলে জানান ইউএনও।#