# মোঃ আলফাত হোসেন……………………………………………………………………..
সন্ত্রাসীদের ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা, পুলিশ প্রশাসনের নরম সুর পাটকল চালু ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে আর প্রতিবাদ নয়, এবার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু, খালিশপুর-দৌলতপুরসহ ৫টি জুটমিলের শ্রমিকদের রাষ্ট্রীয় গেজেট অনুযায়ী সকল বকেয়া পরিশোধ ও রাষ্ট্রায়ত্ব ২৬টি পাটকলের শ্রমিকদের সকল বকেয়া সঠিক হিসাব অনুযায়ী প্রদানের দাবিতে আজ ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় খালিশপুরের দৌলতপুর জুটমিল গেটের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ শুরুর প্রাক্কালে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির প্রচেষ্টা চালায়। পুলিশ প্রশাসনের ভ‚মিকা ছিল নীরব। সন্ত্রাসী এই তরুণ বাহিনীর হাতে রামদা, কাঁচি, লোহার রড হাতে নিয়ে মিলগেটের সামনে এলে তাদের সাথে পুলিশ প্রশাসন দৌলতপুর জুটমিল গেটের সামনে অবস্থান নেয়। শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সাধারণ শ্রমিকরা এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে। কিছু সময় পরে নাগরিক পরিষদের নির্ধারিত কর্মসূচি পালিত হয়।
দৌলতপুর জুটমিল গেট থেকে নাগরিক পরিষদের এক বিক্ষোভ মিছিল খালিশপুর শিল্পাঞ্চেলর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে খালিশপুর জুটমিল গেটের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক শ্রমিকনেতা ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ মোজাম্মেল হক খান এবং সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ খুলনা জেলা আহবায়ক জনার্দন দত্ত নান্টু।
বক্তব্য রাখেন, পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সদস্য সচিব এস এ রশীদ, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি) ফুলতলা উপজেলা সভাপতি গাজী আফজাল হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের ফুলতলা উপজেলা আহবায়ক মোঃ অলিয়ার রহমান শেখ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন শেখ, খালিশপুর-দৌলতপুর জুটমিল যৌথ কারখানা কমিটির সভাপতি ও সিবিএ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন মনি, নওয়াপাড়া পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসেদ আলম শমসের, খুলনা-যশোর আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক মোঃ ইলিয়াস হোসেন, দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির সভাপিত নূর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, যৌথ কারখানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, প্লাটিনাম জুটমিল শ্রমিকনেতা মো. নূরুল ইসলাম, কার্পের্টিং শ্রমিকনেতা জামাল মোল্লা, জেজেআই শ্রমিকনেতা সামস সারফিন সামন, ক্রিসেন্ট জুটমিলের শ্রমিকনেতা মোশারেফ হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য আগে থেকেই পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা ছিল।
পুলিশ আমাদের এই কর্মসূচি পালনের সময় নিরাপত্তা দিয়েছিল এটা সত্য। তবে বিক্ষোভ মিছিল শুরুর পূর্বে স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক অস্ত্রশস্ত্র ও লোহার লাঠি হাতে নিয়ে যে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছিল সেক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে তাদের গ্রেফতারের জোর দাবি জানান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, রাষ্ট্রীয় পাটকল রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু, আধুনিকায়ন এবং শ্রমিকদের সকল বকেয়া সঠিক হিসাব অনুযায়ী পরিশোধের দাবিতে দীর্ঘ ৩৮ মাস আমরা রাষ্ট্রীয় পাটকল শ্রমিকদের সাথে নিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি,প্রবল আন্দোলনের চাপে পড়ে সরকার বাধ্য হয় এসব পাটকল শ্রমিকদের কিছু পাওনা পরিশোধ করতে। এখনও অব্দি খালিশপুর ও দৌলতপুরসহ ৫টি পাটকলের টাকা কোন শ্রমিক একটি টাকাও পায়নি। নানাভাবে তাদের টাকা প্রদানে টালবাহানা করছে।
এমতাবস্থায় শ্রমিকদের জীবনমান প্রচন্ড নিম্নমুখী। সরকার এসমস্ত শ্রমিকদের পথে নামিয়েছে। এদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে ফেলেছে। সরকার শ্রমিক থেকে নামিয়ে দিনমজুরে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছে। যাতে করে শ্রমিকরা মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে না পারে। লিজ নেয়া নতুন নতুন মালিকদের অল্প মজুররিতে এসব পোড়া শ্রমিকরা যাতে এসব মিলে কাজ করতে বাধ্য হয়।
সমাবেশে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, সরকারের মহাপরিকল্পনা হলো শ্রমিকরা যাতে সংগঠিত হতে না পারে। তারা সরকারের সকল ষড়যন্ত্র নস্মাৎ করে দিবে। আমাদের বকেয়া বেতন আমাদের হক, আমাদের অধিকার। সরকারের কাছে আমরা কোন করুণা চাচ্ছি না। আমাদের এই ন্যায়সঙ্গত পাওনা সরকার যদি দিতে না চায় তাহলে আমরা নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দকে সাথে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে শ্রমিকদের সমুদয় বকেয়া আদায় করে নেব।#