# হাবিল উদ্দিন, বাঘা, রাজশাহী থেকে……………
রাজশাহীর বাঘায় তেঁথুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতা সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের তেঁথুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আওয়াল হোসেন ও সভাপতি আব্দুল লতিফ হোসেন (বাবর) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে অভিভাবক সদস্যসহ স্কুল মার্কেটের দোকান মালিক ও স্থানীয় জনগন। সোমবার (২২ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর টাকা আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতাসহ অনিয়মের লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক সদস্য, স্কুল মার্কেটের দোকান মালিকগণ ও জনসাধারণ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাঘা উপজেলায় ২০০০ সালে তেঁথুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুল মার্কেটের ১৬ টি দোকানঘর দোকানীরা নিজ অর্থায়নে তৈরি করে নিয়েছিলো। প্রতিটি দোকানী হতে নিয়মিতভাবে স্কুলকে দোকানের ভাড়া প্রদান করে আসছে। বিদ্যালয় কমিটি প্রায় ০৩ (তিন) মাস পূর্বে দোকান ঘরের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য দোকান মালিকদের নোটিশ দেয়। তাতে লিখা ছিলো, দোকান ঘরের মেয়াদ শেষ। এখন দোকান ঘর নিতে হলে ৫০০০ (পাঁচহাজার) টাকা করে দিতে হবে। সেই মোতাবেক দোকান মালিকগণ ৫০০০ (পাঁচ হাজার) টাকা প্রদান করেছে। কিন্তু কিছুদিন পর প্রধান শিক্ষক ও অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি (প্রধান শিক্ষকের আপন বড় ভাই) অভিভাবক সদস্যদের ছাড়াই (ইচ্ছামত) মিটিং করে। উক্ত মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেই স্কুল মার্কেটের দোকনঘরে ব্যবসা করতে হলে এক লক্ষ বাষট্টি হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে জামানত বাবদ। যদি না দেওয়া হয় তাহলে মার্কেটের দোকানঘর ভেঙ্গে ফেলা হবে।
অভিভাবক সদস্যরা জানান, কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের নিয়ে মিটিং করে রেজুলেশন পাশ করছে। কমিটির মিটিং এ অন্যদের জানানো হচ্ছে না এবং তাদের কথার কোন মর্যাদা দেয়া হচ্ছে না। এছাড়াও প্রায় ০১ মাস পূর্বে স্কুলের মেহগুনি গাছ বিক্রি করা ৫০ হাজার টাকা এবং বিদ্যালয়ের আম বাগান লিজ দেওয়া ১ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কোন উন্নয়ন মূলক কাজে ব্যবহার করা হয়নি। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি টাকাটা আত্মসাৎ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দোকানদার জানায়, করোনাকালীন সময়ে তারা ভালোভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেনি। ব্যবসায়িক ভাবে তারা অনেকটায় ক্ষতিগ্রস্থের মধ্যে আছে। এরপরেও প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বারবার তাদের নোটিশ প্রদান করছে এবং হুমকি দিচ্ছে। আমাদের দোকান ঘর আমরা নিজেরাই তৈরী করেনিয়েছিলাম নিজ নিজ খরচে। এই অবস্থায় ১ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা জামানত দেওয়া এক প্রকার তাদের কাছে অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে তারা ভিসন দুঃচিন্তায় রয়েছে। তাদের আবেদন দোকান ঘরের চুক্তির মেয়াদ ৫ (পাঁচ) বছর বৃদ্ধি করে কারোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে দোকানদারগণ আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে জানান।
প্রধান শিক্ষক, আব্দুর আওয়াল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, বিদ্যালয়ের দোকান মালিকদের জানানো হয়েছে দোকান ঘর নেওয়ার আবেদনের জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে। আর নতুন ভাবে দোকানঘর বরাদ্দ নিতে হলে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জামানত দিতে হবে অন্যথায় দোকান বরাদ্দ পাবে না। আর স্কুলের কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মেহগুনি গাছ কেটে ১২ টি চেয়ার ও টেবিল তৈরী করা হয়েছে। যারা অভিযোগ করেছে তারা ঠিক বলেনি।
অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি, আব্দুল লতিফ হোসেন (বাবর) জানান, বিদ্যালয়ের নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই আয়-ব্যয় চলছে। প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটের দোকান ঘর রাস্তার সাথে হয়ে গেছে। আমরা নতুন ভাবে একটু পিছনে সরিয়ে তৈরী করতে চাচ্ছি। মেহগুনি গাছ কেটে স্কুলের চেয়ার-টেবিলসহ অনেক কাজ করা হয়েছে। আর আম বাগানের ১ লক্ষ টাকা কি কোন টাকা হলো এখন। সব হিসাব নিকাশ প্রধান শিক্ষকই দেখেন। তার কাছে লিখা আছে কোথায় কি খরচ করেছে আর কত জমা আছে। কমিটির একজন এইসব কথা বলছে আর আমার নামে অভিযোগ ও মামলা দিয়েছে মিথ্যা ভাবে। এই প্রতিষ্ঠানে আমার বাবা ৫ বিঘা জমি দান করেছেন। আমাদের জন্যই এলাকাটি উন্নয়ন ঘটছে। আর আমরা এখানকার টাকা কেন নিব বলেন? স্কুলের নিয়োগ নিয়েও অভিযোগ করেছে বিভিন্ন জায়গাতে। সরাসরী এসে দেখা করে কথা বলেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বাঘা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে মুঠোফোনে বার বার কল করলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আখতার বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দু’পক্ষই এসে দেখা করেছে এবং অভিযোগের বিষয়টি সঠিক ভাবে দেখা হবে।#