# আশরাফুল ইসলাম ফরাশী, বাগমারা প্রতিনিধি……………………………………………….
রাজশাহীর বাগমারায় জোকা বিল নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে জমির মালিকদের মধ্যে। জোকা বিলে মাছ চাষ নিয়ে এরই মধ্যে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়েছে। এদের মধ্যে একটি পক্ষ জোকা বিলের সকল জমিতে বিনামূল্যে ধানের আবাদ করে দেয়া সহ বিলের চারপাশের গ্রামের লোকজনের জন্য খাবার পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এ জন্য জোকা বিলে ধান চাষ এবং পানি পান করার জন্য ব্যবহার হচ্ছে ১২টি গভীর নলকূপ ও ৭টি শ্যালো মেশিন। সম্মিলিত ভাবে সেই সকল গভীর নলকূপ, শ্যালো মেশিন এবং সাপলাই পানির সকল ব্যয়ভার বহণ করে এসেছে জমির মালিকরা।
দীর্ঘ সময় ধরে লীজের মাধ্যমে জোকা বিলে মাছ চাষ করে আসছিল জমির মালিকরা। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নতুন করে লীজ না হওয়ায় গভীর নলকূপ, শ্যালো মেশিন ও সাপলাই পানির যাবতীয় খরচ বহন করেছেন ওই সকল জমির মালিকরা।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে আগে কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। মেয়াদ শেষ হওয়ায় জমির মালিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্থানীয় ভাবে ৫ গ্রামের লোকজন মিলে যৌথ ভাবে টাকা উত্তোলন করে বিনামূল্যে ধান চাষ সহ পানি সরবরাহ করে। সেই সাথে নতুন ভাবে ৭ হাজার টাকা করে জমির মালিকদের লীজ মূল্য প্রদান করে বাসুদেবপাড়া, হাট-মাধনগর, কাষ্টনাংলা, গোড়সার এবং পানিয়া গ্রামের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাছ চাষ আরম্ভ করেছে। এরই মধ্যে সাবেক চেয়ারম্যান আহসান হাবিব এর নেতৃত্বে নতুন ভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করে জোকা বিলে যৌথ ভাবে মাছ শুরু করে তারা।
জমির মালিকদের লীজ মূল্য পরিশোধ করে মাছচাষ চলাকালীন সময়ে অন্য একটি পক্ষ হাট-গাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে বসে সেই বিল লীজের জন্য। তবে সেখানে জমির মালিকরা তেমন উপস্থিত না থাকলেও ৬ হাজার টাকা বছর উল্লেখ করে জোকা বিলে জোরপূর্বক মাছ চাষ করার চেষ্টা শুরু করে। জোকা বিলে দখল নিতে এরই মধ্যে গত ২৯ এপ্রিল আফসার আলীর নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশত গুন্ডা বাহিনী ধারালো অস্ত্র নিয়ে এচাহাক আলী, সিহাব , সাহার আলী সহ বেশ কয়েক জনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় বাড়ির আসবাবপত্র, ফ্রিজ, মটরসাইকেল সহ অনেক কিছু ভাংচুর করে। খবর পেয়ে বিলের পাশের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন তাদের বাড়িতে দেখতে যায়। ওই সময় হামলাকারীরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলা চালানো বাড়ি দেখতে আসা লোকজনের ৭টি মটর সাইকেল নিয়ে যায়। এরপর হামলাকারীর মধ্যে মুত্তাছিন বিল্লা মুক্তা বাদী হয়ে অপর পক্ষের ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে। দায়েরকৃত ওই মামলায় সবাইকে জামিন প্রদান করেন মহামান্য আদালত।
মিথ্যা ঘটনায় দায়ের করা মামলা থেকে জামিনে বের হয়ে ওই পক্ষের মূলহোতা আফসার আলী সহ ২০ জনের নাম উল্লখ পূর্ভক ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আদালতে মামলা দয়ের করেছে কাষ্টনাংলা গ্রামের এচাহাক আলী। মামলা হলেও কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে উভয় পক্ষের মধ্যে। এ ঘটনায় যে কোন সময় অনাকাংক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। সেই সাথে মামলার দায়েরের পর থেকে জোর পূর্বক জমির মালিকদের অস্ত্রের মূখে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
জোর পূর্বক তুলে নিয়ে ফাঁকা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ডেমি এবং রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করে নিচ্ছেন। স্বাক্ষর না করলে হত্যার হুমকী প্রদান করছেন তারা। জীবন বাঁচাতে স্বাক্ষর করলেও পরে এসে থানায় অভিযোগ করছে হাসান আলী, কালাম হোসেন, আনছার আলী সহ ভুক্তভোগী জমির মালিকরা।
এ ব্যাপারে জমির মালিক সাবেক চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বলেন, জমির মালিকরা যৌথ ভাবে নতুন করে ধান চাষের পর মাছ চাষ শুরু করেছে। সে জন্য জমির মালিককে লীজ মূল্য প্রদান করেছে। উক্ত বিলে জোর পূর্বক মাছচাষের চেষ্টা করছে অন্যপক্ষ। সেই সাথে তারা বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। এছাড়াও লোকজনকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে গিয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্প সহ বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর করে নিচ্ছে। এটা মেনে নেয়া যায় না।
অন্যদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনারুল ইসলাম বলেন, মামলার প্রয়োজনীয় কাজগপত্র হাতে পেয়েছি। দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করা হবে।#