মোঃ মমিনুল ইসলাম মুন বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের (ডিজিএম) রেজাউল করিম খাঁনের বিরুদ্ধে নানামুখী অনিযম-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। জরিমানা, লোড বৃদ্ধি ও মিটার ভাড়ার নামে গ্রাহকের কাছে থেকে হাজার টাকা হাতিিয়ে নেয়া হচ্ছে। গতকাল ২৯ জুন রোববার এলাকার সহস্রাধিক বিক্ষুব্ধ গ্রাহক পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয ঘেরাও করে ডিজিএম এর অপসারণ ও দুর্নীতির বিচার দাবি করেছেন। এসময় বিক্ষুব্ধ গ্রাহকের রোষানল থেকে বাঁচতে ডিজিএম কৌশলে ভৌ-দৌড়ে সটকে পড়ে।
বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা নানা স্লোগান দিতে দিতে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এ খবর পেয়ে তানোর থানা পুলিশ গিয়ে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের শান্তনা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা বলেন, ডিজিএম এর অপসারণ ও দুর্নীতির বিচার চান, নইলে তারা বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসুচি ঘোষণা করবেন। ডিজিএম এর নির্দেশ কোনো ডকুমেন্ট ছাড়াই গ্রাহকদের কাছে থেকে মিটার ভাড়া ও অবৈধভাবে জমিতে সেচ দেয়ার জন্য ১৫ ’ টাকা থেকে ২৫শ’ টাকা জরিমানা আদায় করা হচ্ছে।।
দুবইল গ্রামের আশরাফুল ও লেলিন বলেন,এই ডিজিএম একজন ঘুষখোর। কামারগাঁ ইউপি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা লিটনের মাধ্যমে সে ঘুষের টাকা আদায় করেন এমনকি অফিসের গাড়ী থাকলেও সে লিটনের মোটরসাইকেলে চড়ে এলাকা চষে বেড়ান।
সরেজমিন দেখা যায়, রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকার সহস্রাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে। গ্রাহকদের অভিযোগ,মিটার না দেখেই চলতি মাসে আগের তুলনায় চারগুণ বেশি বিদ্যুৎ বিল দেয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ জালিয়াতি, অনৈতিক ও অযৌক্তিক। ভুক্তভোগী গ্রাহক রফিকুল ইসলাম বলেন, গত মাসে তার বিল এসেছিল ৬৫০ টাকা।এ মাসে এসেছে ১৮৫০ টাকা। বিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়েনি, তাহলে এত বিল বাড়লো কি ভাবে ? এই বিল দিয়ে কি ভাবে চলবো ? অফিসে অভিযোগ করতে গেলে কর্মকর্তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা ‘দুর্নীতিবাজ অফিসার হটাও’ অতিরিক্ত বিল বাতিল করো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে অফিস ঘেরাও করে ডিজিএমকে অবরুদ্ধ করেন।
এমতাবস্থায় ডিএজিএম-এর অফিস কক্ষে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের নিয়ে থানার এসআই আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিয়ে সমোঝোতা করে দেন। এবিষয়ে তানোর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, বাড়তি বিলের বিষয়ে গ্রাহকদের আবেদন করতে বলা হয়েছে, গ্রাহকরা আবেদন করলে তা সংশোধন করে দিবে বিদ্যুৎ অফিস।
এবিষয়ে তানোর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ডিজিএম রেজাউল করিম খান বলেন, এবার হয়তো মিটার রিডিং বা টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে গ্রাহকদের তিনগুণ বেশি বিল দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রাহকদের বিল সংশোধনের জন্য দরখাস্ত দিতে বলা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন “বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) রমেন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন,বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন,অভিযোগ প্রমাণ হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#