1. admin@sobujnagar.com : admin :
  2. sobujnoger@gmail.com : Rokon :
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
তানোরে আলুর বীজ নিয়ে মহা সিন্ডিকেট দিশেহারা চাষীরা! খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়  বাগমারার হাটগাঙ্গোপাড়া মডেল প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটি গঠন বাংলাদেশ জার্নালিস্ট প্রটেক্ট কমিটির সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য অ্যাডভোকেসি কর্মশালা  সিংড়ায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত বটিয়াঘাটা প্রেস ক্লাবের আহবায়ক কমিটি গঠন কম্পিউটার কী বোর্ডের মাধ্যমে রাজশাহীতে পাহাড়িয়াদের মাতৃভাষার লিখন পঠন কার্যক্রম উদ্বোধন সিংড়ায় মাদরাসা দারুস সুন্নাহ বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ সি ইউ সি সংগঠনের সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রাখায়  রোটারিয়ান ইফতেখার আলী বাবুকে সংবর্ধনা ডুমুরিয়ায় শওকত মোল্যা স্মৃতি উন্মুক্ত পাঠাগারের আয়োজনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতি  অনুষ্ঠান 

রাজশাহীর ঐতিহাসিক বড় কুঠির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস 

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২
  • ১১৭ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

# আবুল কালামআজাদ…………………….

অষ্টাদশ শতকের প্রথম ভাগে ওলন্দাজদের এতদঞ্চলের বাণিজ্যিক কেন্দ্রীয় কুঠিরূপে এই ‘বড়কুঠি’ ১২ কামরা বিশিষ্ট দ্বিতলাকারে স্থাপিত হয়। এই মূল কুঠির দৈর্ঘ্য ৮২ ফুট, প্রস্থ ৬৭ ফুট। একটি সভা কক্ষ বিশিষ্ট উপরে ৬টি কামরা আছে। এর দরজা ও জানালাগুলি অধিকাংশই সুপ্রশস্ত ও প্রায় একই মাপের দেখা যায়। নীচের কামরাগুলি বর্তমানে বহু কামরায় বিভক্ত করা হয়েছে। উপরে উঠা নামার জন্য পশ্চিম পাশ দিয়ে একটি প্রশস্থ সিঁড়ি রয়েছে।

 

ইংরেজ আমলে এই সুবৃহৎ কুঠির সাথে আরও কতগুলো কামরা সংযোজিত করে কুঠির আকার বড় করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলা ১৩০৪ সালের ভূমিকম্পে (ইং ১৮৯৭ সাল) উক্ত সংশ্লিষ্ট কামরাগুলি ভূমিস্মৎ হয়ে গেলে যে অংশটি অবশিষ্ট থাকে, তাই আদি ও বর্তমান ‘বড় কুঠি’।

 

নীচের কামরাগুলি অপেক্ষাকৃত অন্ধকারপূর্ণ। তখন এই কামরাগুলি রেশমের গুদামরুপে ব্যবহৃত হত। উপরের কামরাগুলি রেশমের গুদামরূপে ব্যবহৃত হত। উপরের কামরাগুলি আবাসিক বাংলার জন্য নির্দিষ্ট থাকত।

 

ওলন্দাজগণের সময়ে এই দুর্গবিশিষ্ট সুদৃশ্য সৌধটি সুরক্ষিত ছিল। যে কোন দিক হতে শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হতে পারে, সেই জন্য কুঠির প্রত্যেক ধারে শান্তি-গৃহ (Towors) ছিল। এর প্রচীর-দেয়ালে শত্রু সৈন্য লক্ষ্য করার জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র ছিল এবং শান্তি-গৃহগুলিতে বন্ধুকধারী পাহারারত রক্ষী থাকত। এই সময়ে কুঠির ছাদের উপরে কতকগুলো বিশেষ বিশেষ ধরণের কামান স্থাপিত ছিল। পরবর্তীকালে সেই সব মেদিনীপুর জমিদারী কোম্পানী কর্তৃক নদীয়ার শীকারপুর কুঠিতে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমান শতকের গোড়ার দিকে এর একটি কামান রামপুর-বুয়ালিয়ার পুলিশ লাইনে রক্ষিত ছিল। এটা মধ্যাহ্নকালীন তোপধ্বনি করার জন্য ব্যবহার করা হত। (Where it served still a few years ago as the middy gun) সেই কামানের নলে বন্ধুর ভাবে ভি.ও.সি.এ (V.O.C.A.) অক্ষর কয়েকটি উৎকীর্ণ ছিল। এর প্রথম তিনটি অক্ষর যুক্ত ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ভেরিনিগডি ওসটেনডিশ (Vereenigde ostindiche) কোম্পানীর পরিচায়ক বলে অনুমিত হয়।

 

এতদব্যতীত এ বিষয়ে আর কোন বিস্তারিত বিবরণ জানা যায় না। সম্ভবত: এটা বড় কুঠিতে ওলন্দাজগণের রক্ষিত একটি কামান ছিল বলে মনে হয়। অপর একটি অচল ৭ ফিট লম্বা ক্ষুদ্র কামান বিশেষ বুয়ালিয়া কুঠি হতে ‘মেদিনীপুর জমিদারী কোম্পানী’ মুর্শিদাবাদের মরিচাই কুঠির ম্যানেজার সাহেবের বাংলোতে স্থানান্তরিত করে।

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, যে মালয়ে বাণিজ্যকালে ওলন্দাজ ও পর্ত্যুগীজদের বিরুদ্ধে পূর্ব দেশীয় জলদস্যুগণ কর্তৃক এই জাতীয় কামান ব্যবহৃত হত। পরবর্তীকালে শান্তির সময়ে মালয় জলদস্যু এই সব প্রয়োজনীয় বহু অস্ত্র সস্ত্র ওলন্দাজ ও পর্ত্যুগীজদিগকে দিয়ে ছিল। এই ক্ষুদ্র কামানটি সাধারণত: অত্মরক্ষা মূলক কার্যে ব্যবহার করা হত। খুব সম্ভবত এই বিশেষ কামানটি ওলন্দাজগণ নদী পথে রেশম অথবা অন্যান্য মূল্যবান দ্রব্যাদির সাথে নৌকার মধ্যে লুকিয়ে এখানে এনেছিল।

 

এতদব্যতীত পুলিশ লাইনে বর্তমানে দুইটি ও পুলিশ সুপারিন্টেণ্ডেন্ট সাহেবের কুঠিতে একটি প্রাচীন কামান রক্ষিত আছে। এই তিনটি কামান কোথা থেকে আনা হয়েছে তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে প্রাচীন লোক মুখে শোনা যায় এই সব কামান বর্তমান শতকের গোড়ার দিকে বুয়ালিয়ার ইংরেজদের স্থানীয় কুঠি হতে সেখানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

 

ওলন্দাজগণ এই কুঠি ইং ১৮৩৩ সালে পরিত্যাগ করে চলে গেলে তা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বাণিজ্যিক আবাসিক কুঠিরুপে পরিণত হয়। তৎপর ইং ১৮৩৫ সালে তা সেমার্স রবাট ওয়াটশন এন্ড কোম্পানীর হাতে চলে যায়। মেসার্স ওয়াটশন কোম্পানী দীর্ঘ দিন ধরে রেশম ও নীল কারবারের জন্য এই কুঠি ব্যবহার করে।

 

সিপাহী বিপ্লবের সময় এই কুঠি ইংরেজদের সেচ্ছাসেবক বাহিনীর জন্য এতদঞ্চলের বিশেষ হেড কোয়াটার্স নির্দিষ্ট হয়েছিল। উনবিংশ শতকে এই কুঠি মেদিনীপুর জমিদারী কোম্পানীর অধিকারভূক্ত হয়। পরে এই কুঠির আংশিক মেদিনীপুর জমিদারী কোম্পানী ‘ইণ্ডিয়া জেনারেল নেভিগশন এণ্ড রিভার্স ষ্ট্রিম’ কোম্পানীর বুয়ালিয়া শাখার (Local Agent) কর্মচারীদের বাসস্থান ও অফিস গৃহের জন্য ভাড়া দিয়েছিল।

 

তারপর ইং ১৯৫১ সালে জমিদারী একায়ার্ড করা হলে তখন এই কুঠি পাকিস্তান সরকারের খাস মহল (Koas Mahal) ভূক্ত হয়ে যায়। অতঃপর এই কুঠি রাজশাহী জেলা তথা বিভাগীয় খাদ্য বিভাগের অফিসাদির জন্য ব্যবহৃত হতে থাকে।

 

পরবর্তীকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে এই দ্বিতল সৌধটি (বড় কুঠি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলারের অস্থায়ী অফিস ও আবাসিক কুঠিরূপে রুপান্তরিত করে নেওয়া হয়েছে। উক্ত কুঠির চুতুষ্পার্শে ইংরেজ সাহেবদের বসতি ছিল। রামপুর-বুয়ালিয়ার প্রাচীন ভূমি নকশাতে এই সবের উল্লেখ আছে।

 

ওলন্দাজদের এই বড় কুঠি ব্যতীত ইংরেজদের (বিশষত: মেদিনীপুর জমিদারী কোম্পানীর) আর একটি কীর্তি এই ‘সাহেব বাজার’। ইংরেজ রেশম কুঠিয়ালদের ব্যবসায়-বাণিজ্যের সময়ে এখানে তাদের একটি কলোনী ও বাজার গড়ে উঠে। তা ‘সাহেবগঞ্জ’ নামে খ্যাত ছিল, এই ‘সাহেবগঞ্জ’ নদী গর্ভে ভেঙ্গে গেলে বর্তমান ‘সাহেব বাজারের’ সৃষ্টি হয়।

 

এই সময়ে (ইংরেজ আমলে) প্রাচীন পাকা বাড়ীগুলোর মধ্যে কেমিষ্ট্রী বিল্ডিং, কলেজের মেইন বিল্ডিং, মাদ্রাসা বিল্ডিং, উল্লেখযোগ্য। কলেজিয়েট স্কুল বিল্ডিংও প্রাচীন। এতদব্যতীত রাজশাহী সেন্ট্রাল জেলের চত্বরের উত্তর ধারে পূর্ব-পশ্চিম লম্বা একটি বিশিষ্ট ব্যারাক প্রাচীন বলে মনে হয়। এই জেলখানার দাক্ষিণে শ্রীরামপুর মৌজায় ইংরেজদের আর একটি কলোনী গড়ে উঠেছিল। অত:পর শ্রীরামপুর মৌজায় অবস্থিত সরকারী অফিসাদিসহ কলোনীটি পদ্মাগর্ভে নিমজ্জিত হয়ে গেলে জেলখানার চত্ত্বরে ইংরেজ আমলের উক্ত সুবৃহৎ এক তালা ব্যারাকটিকে কেন্দ্র করে ১৮২৫ ইং সালে বোয়ালিয়াতে প্রথম জেলখানা স্থাপিত হয়।

 

এতদব্যতীত মতিহার, কাজলা প্রভৃতি স্থানে এবং বোয়ালিয়া, রাণীবাজার প্রভৃতি প্রাচীন পল্লীতে অনেক পুরাতন পাকা বাড়ী ঊনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে রেশম ব্যবসায়ী কর্তৃক বিনির্মিত হয়ে ছিল। তার নিদর্শন এখনও এই সব অঞ্চলে দৃষ্ট হয়ে থাকে।

 

ওলন্দাজ, ইংরেজ ও দেশী রেশম ব্যবসায়ীদের কর্ম কীর্তির এই হলো মোটামুটি কথা। ইংরেজী ১৮২৫ সালে জেলার সদর দপ্তর রামপুর বোয়ালিয়াতে স্থানান্তরিত হবার পর থেকে ইংরেজ শাসকদের হস্তক্ষেপ ও রাজশাহী রাজা জমিদারদের প্রচেষ্টায় বোয়ালিয়া-টাউনের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিবিধ জন কল্যাণমূলক সংস্থার মাধ্যমে রামপুর-বোয়ালিয়ার আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।#

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট