নিজস্ব প্রতিবেদক…………………
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের যেসমস্ত সন্ত্রাসী কর্মকর্তা ও কর্মচারি গত ৫ আগস্ট ‘২৪ রাজশাহীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দেলনের উপর নৃশংস হামলা চালিয়ে রাজশাহীর রাজপথ রক্তাক্ত করেছিল তারা আজও বহাল তবিয়তে চাকুরি করছেন। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আজও কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
গত ৫ই আগস্ট এবং এর আগের আন্দোলনের দিনগুলোতে রাজশাহী মহানগরীতে আওয়ামীলীগ সংগঠনের কর্মীদের পাশাপাশি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামী সমর্থিত কর্মকর্তাদের নির্দেশে অধীনস্ত কর্মচারীরা লাঠিসোটা, রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, ভিন্ন দেশীয় তৈরি অস্ত্রসহ অনেকে অবৈধ আগোনয়াস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারা রাজশাহী রেলগেট ও সাহেব বাজারে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল। এতে বেশ কিছু হতাহত হয়েছিল। ঐসব কর্মকর্তারা এতদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও এখন তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং অফিসে কাজ কর্ম করছে। তাতে করে অন্যান্য সংগঠন, বৈষম্য ছাত্র বিরোধী আন্দোলন এর শিক্ষাথী বা প্রশাসনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।
এরাই তাৎকালিন সময়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এর অষ্টম তালাকে অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহার করতো। আর গোটা সিটি কর্পোরেশনকে সন্ত্রাসীদের অভয় আস্তানা বানিয়ে ছিল। সেখানেই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের লালন পালন করা হতো এমনকি সেখানে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আর এদের পরিচালনা করতো রাসিকের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। তারা ইচ্ছেমত চাকুরি করতেন, লুটপাট করে খেতেন আর নিজেদের আড্ডাখানা হিসেবে গড়ে তোলেন।ঐসব কর্মকর্তা ঐসময়ে কখন আফিসে আসে কখন যায় তার খোঁজ কেউ রাখার ক্ষমতা রাখতো না।
৫ আগস্টর পর রাসিক ভবনের অস্টম তালায় ব্যাপক দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। লালঅস্ত্র, রক্তমাখা। এরা কারা, তারাই যাদের নিয়োগ মাত্র ঘটনার ২/৩ মাস আগে হয়েছিল। তারা ছিল সবাই তরুণ এবং সন্ত্রাসী। ওদের কোন রকম আফিসিয়াল কাজ ছিল না, ছিলনা কোন চেয়ার টেবিল। অনেকে অফিসে না এসেও বেতন ড্র- করতো। এদের সংখ্যা প্রায় ৮শ’ ১২শ’ মাস্টাররোল কর্মচারী। তাদের সংগঠনের মিছিল মিটিং আর সন্ত্রাসী কাজের জন্য নিয়োগ দিয়েছিলেন সাবেক মেয়র। তারা আজও বহাল তবিয়তে আছে, অথচ তাদেরেই বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা ছিল সবার আগে।
যারা মদদ বা উস্কানী দিয়েছিল বা নির্দেশ দিয়েছিল সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে তাদের বিরুদ্ধে রাসিকপ্রশাসন আজও কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি বা নেয়া হচ্ছে না, কিন্তু কেন? অথচ রাসিকের প্রশাসক দায়িত্ব নেয়ার পর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সিসি ক্যামেরা দেখে দেখে খুঁজে বের করা হবে ঐসব অপরাধী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ঐসব কর্ম কর্মকর্তা কর্মচারি এখন নিয়মিত অফিস করছেন, খেশ আলাপ করছেন, বেতন ও উত্তোলন করেছেন। মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে আজও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, কেন হয়নি এটাই রাসিক প্রশাসকের কাছে আমাদের জিজ্ঞাসা।
যারা দেশের জনগণের ও সরকারি সম্পদের এতটা ক্ষতি করলো তারা কি করে সাধারণ ক্ষমা পেতে পারে সেটা আমাদের কারো বোধগম্য হচ্ছে না। যাদের কারণে রাসিক ভবনের কয়েক কোটি টাকা সম্পদের ক্ষতি হলো তারা রেহাই পায় কি করে। দেশের জনগণ এর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করে।
আজও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। ঘুরে দাঁড়াতে আরো অনেকটা সময় লাগবে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসার জায়গা ব্যবস্থা আজও নিরসন হয়নি। খাতাপত্র, কম্পিউটার, চেয়ার টেবিল অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এগুলো ছাড়া অফিস পূর্ণাঙ্গভাবে চালানো কস্টসাধ্য।
রাসিক থেকে সকল অপশক্তি দূর করে সত্যিকারের নির্ভেজাল, সবার প্রিয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করা দরকার তাই এসরকারকে করতে হবে। এক কথায় রাসিককে ঢেলে সাজাতে না পারলে দাপ্তরিক কাজকর্ম এবং জনসেবা চরমভাবে ব্যাহত হবে। রাজশাহী অঞ্চলের বিবেকবান মানুষ মনে করে এর জন্য রাসিক প্রশাসককে উদ্যোগী হতে হবে। যেমনটি উদ্যোগী ছিলেন প্রথম দিকে। আমরা রাজশাহীবাসি তার সুচিন্তিত রায়ের অপেক্ষায় থাকলাম।#