বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় বণ্যা দুর্গত এলাকায় মানবিক সহায়তার শুকনা খাবার ও স্যালাই প্রদান করে পাশে দাড়িয়েছে বিএনপি। বৃহসপতিবার(১৪-০৮-২০২৫) চকরাজাপুর ইউনিয়নের পানিবন্দী ৫০০পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছে দলটি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-এর নির্দেশনায় রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম সরকার-এর খাদ্য সহায়তার শুকনা খাবার ও স্যালাইন প্রদান করা হয়।
মানবিক সহায়তা প্রদানকালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান একজন মানবিক নেতা। তার নির্দেশনায় বন্যায় আক্রান্ত মানুষকে আগামীতে মানিবক সহায়তা দেওয়া হবে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, স্থানীয়ভাবে ও কেন্দ্রীয়ভাবে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের পাশে সবসময় থাকবে বিএনপি-ছাত্রদল ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন বলেন,দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার যেসব এলাকার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেখানেই মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
পরে তারাসহ মানবিক সহায়তার শুকনা খাবার ও স্যালাইন তুলে দেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ হোসেন, রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম সরকার, রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ, গড়াগড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুদ করিম টিপু সরকার, চকরাজাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জগলু শিকদার।
প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম- পলাশী ফতেপুর, কালিদাসখালী ,আতারপাড়া,চৌমাদিয়া, দিয়াড়কাদিরপুর,লক্ষীনগর ও গড়গড়ি ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম- কড়ারি নওশারা,খানপুর গুচ্ছগ্রাম, আশরাফপুর এবং খানপুর নীচ পাড়াসহ আক্রান্ত এলাকার ১০ গ্রামের মোট জনসংখ্যা ৮ হাজার। এর মধ্যে পানিবন্দী ২ হাজার ৪০০পরিবার।
পলাশিফতেপুর গ্রামের রুনিয়া খাতুন জানান, ৩বিঘা জমির ভুট্রা খেত বণ্যায় ডুবে গেছে। কালিদাশখালি গ্রামের বাতেন মোল্লার ৫বিঘা জমির কাউন ও ৩বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে । মজিবর শিকদারের আবাদ করা ১০ বিঘা পেঁপে বাগানে কোমর পানি। কালিদাশখালি গ্রামের আনোয়ার শিকদার বলেন, তার আবাদ করা ৪বিঘা জমির ধান ও পেঁপে বাগান বণ্যায় সব ডুৃবে গেছে। গো খাদ্যের সংকটে অনেকে কাঁচা ধান কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন। যাদের ঘরে পানি গিয়েছে,তারা মাচা করে থাকছেন আর অন্য জায়গায় রান্না করে আনছেন। গত ৫দিনের বন্যায় ইউনিয়নটির প্রায় ১৭০০শ বিঘা জমির আবাদি ফসলসহ গোচরণভূমি ও রাস্তাঘাট বণ্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতেও রয়েছে, চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ এর চারপাশে ৫০টি পরিবার । চকরাজাপুর ইউনিয়নের পলাশিফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮দিনের ছটি ঘোষনা করা হয়েছে। লক্ষ্মীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেড়ার অর্ধেক পানিতে ডুবে গেছে।
ইউনিয়নটির বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জগলু শিকদার বলেন, বন্যার সাথে কোথাও কোথাও ভাঙনও দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষকে পোঁকা মাকড়ের সাথে বসবাস করতে হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অনেক ঘর-বাড়ি ডুবে যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, তার উপজেলার প্রায় শতাধিক হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাম্মী আক্তার বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। মানবিক সহায়তায় ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বৃহসপতিবার(১৪-০৮-২০২৫) উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করা হয়েছে ।#