# পোরশা (নওগাঁ)প্রতিনিধি…………………………
নওগাঁর পোরশা উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার পাশে প্রায় অর্ধলক্ষ তালবীজ বপন করার জন্য বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরুষ্কার পাচ্ছেন মশিদপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের কৃষক গৌতম কুমার সাহা। বিগত প্রায় ১২ বছর ধরে নিজ উদ্যেগে তিনি তালবীজ বপন করেছেন।
মশিদপুর ইউনিয়নের গ্রামিন সড়কগুলিতে গেলেই চোখে পড়বে সারিসারি তালগাছ। কতগুলো বড় হয়েছে আবার কতগুলো বড় হয়ে উঠছে। এগুলো ১২বছর ধরে বপন করেছেন গৌতম কুমার। এখনও তিনি বিভিন্ন রাস্তার পাশে তালবীজ বপন করছেন। তার তালবীজ বপনের লক্ষ্যই হলো প্রকৃতি সুরক্ষা। ফলে প্রকৃতি সুরক্ষায় অবদান রাখার জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২৫-এর জন্য মনোনীত হয়েছেন তিনি। পাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার।
আগামী ১২ অক্টোবর তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে জানাগেছে। গৌতম কুমার সাহা জানান, তিনি জাতীয় কৃষি পুরুস্কার পাওয়ার জন্য মনোনিত হওয়ায় খুব খুশি। তিনি জানান, তালগাছ মানুষকে বজ্রপাত থেকে রক্ষা ও মাটির ক্ষয় রোধ করে জেনেছেন। এরপর থেকে প্রত্যেক বছর ভাদ্র-আশ্বিন মাসে তালবীজ সংগ্রহ করে সেগুলো গ্রামিন সড়কের পাশে বপন করেন। তার ইচ্ছে উপজেলার সকল গ্রামিন সড়কের পাশে তিনি তালবীজ বপন করবেন।
তিনি প্রথমত তালবীজ নিজেই সংগ্রহ করতেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে তালবীজ সংগ্রহ করছেন বলে জানান। তালবীজ সংগ্রহ করা একটু কঠিন হলেও তিনি তালবীজ বপন করে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরও জানান, ২০১২ সালে শিশা-দেউলিয়া সড়কের কোলাপাড়া থেকে ভবানীপুর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের পাশে প্রায় ১ হাজার তালবীজ বপন করেন।
২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত শিশা-দেউলিয়া সাত কিলোমিটার সড়কের দুই পাশেও তালবীজ বপন করেন। এ ছাড়া মহাদেবপুর-পোরশা এবং শিশা-মোল্লাপাড়া সড়কের দুই পাশে ১৫ কিলোমিটার জুড়ে তালবীজ বপন করেছেন তিনি। এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি তালবীজ বপন করেছেন। এর মধ্যে কিছু বীজ নষ্ট হয়েছে তবে বেশীর ভাগই বড় তালগাছে পরিনত হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ্ মঞ্জুর মোরশেদ চৌধুরী বলেন, গৌতম কুমার সাহা একজন সাদা মনের মানুষ। তিনিও গৌতমের তালবীজ বপনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন বলে জানান। তবে গৌতমের মত ক্ষুদ্র একজন কৃষক প্রকৃতি রক্ষায় নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এর ফলে তিনি বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরুষ্কার পাচ্ছেন জেনে তিনি খুবই আনন্দিত। যা সত্যিই এ উপজেলার জন্য নজিরবিহীন এবং তিনি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে নিজেকে গর্ববোধ করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, রাস্তার পাশে এবং খাস জায়গায় তালবীজ বপন করে প্রকৃতি সুরক্ষা ও বজ্রপাত নিরোধে ভূমিকা রাখায় কৃষি পদকের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে গৌতম সাহার তথ্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। ফলে তিনি ‘‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২৫’’-এর জন্য মনোনীত হয়েছেন। এতে তারাও গর্বিত এবং এরকম কাজের সাথে জড়িত সকল কৃষকের পাশে তারা সব সময় থাকবেন ও উৎসাহিত করবেন বলে জানান।#