1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Rokon :
রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
প্রাইজ মানি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত নামাজ: শরীর ও আত্মার প্রশান্তির অমূল্য সম্পদ … বাঘায় পরিত্যক্ত বিদেশী পিস্তল, পাইপগান ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার পোরশায় বিএনপির নির্বাচনী জনসভায় নেতাকর্মীদের ঢল রূপসায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত তানোরে গভীর রাতে হিমাগারে ডাকাতি, সিকিউরিটি ইনচার্জ জখম বাংলাদেশ প্রেসক্লাব শিবগঞ্জ উপজেলা শাখার মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত  এক দফা দাবিতে রাজশাহী ওয়াসা কর্মচারীদের মানববন্ধন পত্নীতলায় মাদ্রাসার শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের  মানববন্ধন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভোলাহাট সীমান্তে বিপুল পরিমাণ নেশা জাতীয় ট্যাবলেট জব্দ করল ৫৯ বিজিবি

নামাজ: শরীর ও আত্মার প্রশান্তির অমূল্য সম্পদ …

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

৥ ড. মোঃ আমিনুল ইসলাম ৥

নামাজ, ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি অত্যাবশ্যকীয় ইবাদত। এটি কেবল কিছু শারীরিক ভঙ্গি আর দোয়া পাঠের সমষ্টি নয়, বরং একজন মুমিন ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। নামাজ আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের মাধ্যম। এর মাধ্যমে বান্দা তার সৃষ্টিকর্তার সামনে নিজের বিনয় প্রকাশ করে এবং তার করুণা ও ক্ষমা প্রার্থনা করে। এটি শুধু ধর্মীয় বাধ্যবাধকতাই নয়, বরং শরীর ও আত্মার জন্য এক পরম প্রশান্তির উৎস, যা মুমিনকে পার্থিব জীবনের নানারকম অস্থিরতা থেকে রক্ষা করে।

এই নিবন্ধে আমরা নামাজের গভীর তাৎপর্য, এর বহুমুখী উপকারিতা এবং কীভাবে এটি আমাদের জীবনকে শান্তিময় করে তোলে, তা আলোচনা করব।

নামাজের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব নামাজ মুমিনের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রধান উপায়। দিনে পাঁচবার নামাজের জন্য আহ্বান মুমিনের মনকে জাগিয়ে তোলে এবং তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে সে একজন মুসলমান এবং তার জীবনের উদ্দেশ্য কেবল দুনিয়াবি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নয়। ফজরের নামাজ দিয়ে দিনের শুরু হয়, যা পুরো দিনের জন্য বরকত ও শক্তি নিয়ে আসে। জোহরের নামাজ দিনের মধ্যভাগে বিরতি এনে দেয়, যখন মানুষ তার কাজকর্মে ব্যস্ত থাকে। আসরের নামাজ দিনের শেষ ভাগে আল্লাহর প্রতি মনোযোগ ফিরিয়ে আনে। মাগরিবের নামাজ দিনের সমাপ্তি ঘোষণা করে এবং এশার নামাজ দিনের সব কাজ শেষ করে প্রশান্ত চিত্তে আল্লাহর কাছে সমর্পণের সুযোগ দেয়।

নামাজের প্রতিটি অংশ, যেমন – কিয়াম (দাঁড়ানো), রুকু (নত হওয়া), সিজদা (মাথা অবনত করা), এবং ক্বাদা (বসা) – আল্লাহর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান ও বিনয়ের প্রকাশ। সিজদা হলো বান্দার সবচেয়ে বেশি আল্লাহর কাছে পৌঁছানোর সময়, যখন তার কপাল মাটিতে ঠেকে যায় এবং সে তার রবের কাছে সর্বোচ্চ বিনয় ও আত্মসমর্পণ প্রকাশ করে। এই আত্মসমর্পণের মাধ্যমেই বান্দা তার ভেতরের অহংকার ও দম্ভকে দূর করে, যা তাকে প্রকৃত শান্তি ও বিনয়ের দিকে পরিচালিত করে। শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা নামাজ শুধু আধ্যাত্মিক উন্নতিই সাধন করে না, বরং এর রয়েছে বহু শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা।

নামাজের বিভিন্ন ভঙ্গিগুলো এক প্রকার হালকা ব্যায়ামের মতো কাজ করে, যা শরীরের পেশী, হাড় ও জোড়ার নড়াচড়া নিশ্চিত করে। এর মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল থাকে। রুকু ও সিজদার ফলে মেরুদণ্ড ও পিঠের পেশী নমনীয় হয়, যা পিঠের ব্যথাসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক। মানসিক দিক থেকে, নামাজ হলো এক প্রকার ধ্যান বা মেডিটেশন। যখন একজন মুমিন নামাজে দাঁড়ায়, তখন সে তার মনকে দুনিয়াবি সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করে আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করে। এটি তার মনকে শান্ত করে, মানসিক চাপ কমায় এবং অস্থিরতা দূর করে। নিয়মিত নামাজ আদায়কারীর মধ্যে ধৈর্য, সহনশীলতা এবং শৃঙ্খলাবোধের বিকাশ ঘটে। নামাজের সময় আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে যে মানসিক স্থিরতা আসে, তা একজন মানুষকে দৈনন্দিন জীবনের কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার শক্তি যোগায়। সামাজিক গুরুত্ব জামাতে (দলবদ্ধভাবে) নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মুসলিম সমাজে একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে ওঠে। ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু, সাদা-কালো—সব ধরনের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একই কাতারে দাঁড়ায়, যা সাম্যের এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত। এটি মানুষকে একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শেখায় এবং সামাজিক বিভেদ দূর করে।

জামাতে নামাজ আদায়ের ফলে মুসলিমরা একে অপরের খোঁজ-খবর নিতে পারে এবং একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসার সুযোগ পায়। এটি একটি শক্তিশালী সামাজিক বন্ধন তৈরি করে, যা মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ রাখে।

নামাজ সত্যিই শরীর ও আত্মার প্রশান্তির এক অমূল্য সম্পদ। এটি কেবল একটি ইবাদত নয়, বরং একটি জীবন বিধান, যা একজন মানুষকে শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক এবং সামাজিকভাবে উন্নত করে। নামাজের মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর সঙ্গে এক নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে, যা তাকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিক পথে পরিচালিত করে। যখন দুনিয়াবি কোলাহল ও অস্থিরতা মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে, তখন নামাজের মাধ্যমেই মুমিন তার ভেতরের প্রশান্তি খুঁজে পায়। তাই, নামাজকে শুধুমাত্র একটি আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে না দেখে, বরং আল্লাহর দেয়া এই অমূল্য উপহার হিসেবে গ্রহণ করা উচিত, যা আমাদের জীবনকে আরও সুন্দর, শান্ত ও অর্থবহ করে তোলে।#

৥ লেখক একজন শিক্ষক কবি গবেষক ও প্রাবন্ধিক।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট