বিশেষ প্রতিনিধি রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরাঞ্চলের খেয়াঘাট এলাকায় গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দুইটা স্পিডবোট ভাঙচুর ও একটি স্পিড বোটের ইঞ্জিন খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। বালুমহলের চাঁদা না দেওয়ার দ্বন্দ্বে এমন ঘটনার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য,মাঝে মধ্যে গভীর রাতে তারা গুলির শব্দ শুনতে পান। গত রোববার (০৬-০-২০২৫) গভীর রাতে একই ভাবে গুলির শব্দ শুনেছেন। জানা যায়, রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আওতাধীন উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনগর মৌজায় ২৪.০০ একর বালুমহালটি এবছর(বাংলা১৪৩২ সন) মেসার্স সরকার ট্রেডার্সকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদার এসএম এখলাসের লোকজন সেখানে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে ক্রয়-বিক্রয় করেন।
সরেজমিন সোমবার কথা হলে ইজারাদারের কর্মরত ম্যানেজার বিলাল হোসেন জানান, এখানকার বালু নদীপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় নিয়ে বিভিন্ন জেলাতে বিক্রি করা হয়। তবে এই বালু নিয়ে যেতে হলে বিভিন্ন স্থানে চাঁদা দিতে হয়। আর না দিলেই বিরোধিতা শুরু হয়। রোববার দিবাগত (৬ জুলাই) রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেই ঘটনাই ঘটেছে। গুলির খোশা দেখে গুলি ছুঁড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পেরেছেন।
স্পিডবোটের ড্রাইভার সালাম বিশ্বাস বলেন, সেই রাতে হঠাৎ করে ৩ টি নৌকায় প্রায় ৩৫-৪০ জন সন্ত্রাসী ঘাটে এসে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এসময় ড্রেজারের মধ্যে থাকা ড্রাইভাররা ভয়ে নদীর ঘাট থেকে উপরে উঠে আত্মরক্ষা করেন। সেই খেয়া ঘাটে থাকা দুইটা স্পিডবোট নদীর মাঝখানে নিয়ে গিয়ে ভাঙচুর করে একটি স্পিড বোটের ইঞ্জিন খুলে নিয়ে চলে যায়।
স্থানীয় ওয়াজেদ সিকদার জানান, সোমবার ভোরে খেয়া ঘাটে মাছ ধরার জন্য যান। সেখানে গুলাগুলি, দুইটা স্পিডবোট ভাঙচুর এবং একটি পিডবোটের ইঞ্জিন নিয়ে গেছে বলে শুনেছেন। খেয়া ঘাটের পাড়ের একজন গ্রাম পুলিশ বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে গুলির শব্দ পান। পরে ঘরের ফাঁক দিয়ে দেখেন তিনটা নৌকাতে প্রায় ৪০ জনের মতো লোক এদিক ওদিক ছোটা ছুটি করে গুলি ছুড়ছেন। এসময় ড্রেজার মেশিনের ড্রাইভাররা তার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম সরকার বলেন, বৈধ ইজারা নিয়ে তারা বালু উত্তোলন করছেন। কিছু দিন আগে লালপুরের কাকন বাহিনীর লোক যৌথভাবে খাল এন্টারপ্রাইজ নামে স্লিপ দিয়ে খাজনা আদায় করে। যেটা বৈধ কিনা তার কোন প্রমাণ নেই। আমার এখানকার বালুবাহি ট্রলার বা ড্রেজার থেকে তারা চাঁদা দাবি করে। আমরা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা হয়তো এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নৌ পুলিশ ও বাঘা থানা পুালিশ। নৌ পুলিশ এর চারঘাট ফাঁড়ির ইনচার্জ হুমায়ূন রশীদ জানান, এপারে বৈধ ইজারা বালু উত্তোলন করছে। উত্তোলন করা বালু ঈশ্বরদীর দিকে নিয়ে বিক্রি করে। মূলতঃ সেই বালু ঈশ্বরদী বিক্রি করতে দিবে না। এনিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর এলাকার লোকজনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কথা শুনেছেন। এনিয়ে হয়তো রাতের অন্ধকারে গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে মুঠোফোনে দৌলতপুর থেকে জানানো হয়েছে,তাদের এলাকাতেও রাতের অন্ধকারে গুলি ছুড়েছে।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ আফম আছাদুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে নৌপুলিশ সহ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।#