মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে পৌরসভা এলাকায় দুই দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ আদেশ জারি করেন। এতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত পৌরসভা এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার পৌর এলাকার মহিষালবাড়িতে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরীফ উদ্দিনের অনুসারীরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করে। কাকনহাট পৌরসভা বিএনপির ব্যানারে এ অনুষ্ঠানে শরীফ উদ্দিন প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল।
অন্যদিকে, অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারী গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপিও সাত দিন আগে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বুধবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলাদা কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মঞ্চ তৈরির সময় শরীফ উদ্দিনপন্থীরা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নেয়।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শাওয়াল অভিযোগ করে বলেন, “আমরা এক সপ্তাহ আগে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করছিলাম। আজ বিকেলে মঞ্চ তৈরির সময় শরীফ উদ্দিনের অনুসারীরা বাধা দেয়, এ কারণে সংঘর্ষ হয়। আমাদের অন্যায়ভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হয়নি।” অন্যদিকে কাকনহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি জিয়াউল হক সরকার বলেন, “শরীফ উদ্দিনের নির্দেশে সেখানে আয়োজন করা হয়েছিল। তবে যেহেতু ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে, এখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত আলোচনা সাপেক্ষে নেওয়া হবে।”
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি রুহুল আমিন জানান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শান্তি বজায় রাখা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ বলেন, “আগেই দুই পক্ষ অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে আমাদের অবহিত করেছিল। তবে অনুষ্ঠানস্থল কাছাকাছি হওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায় এবং সংঘর্ষের ঘটনায় জননিরাপত্তার স্বার্থে পৌরসভা এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।#