# আবুল কালাজ আজাদ………………………………………
ভয়াল ৮`ই ফেব্রুয়ারী, ২০১০ সালের এই রাতে তৎকালীন জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর নির্দেশনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায় জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা।
২০০৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অন্তর্গত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে প্রতিবাদ করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। আমরা রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তখন ক্যাম্পাসে জনমত সৃষ্টি করি ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে আর ঠিক তখনই ২০১০ সালের ৬ ই ফেব্রুয়ারী জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে জনসভা করে যার প্রধান অতিথির ভাষণে নিজামী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে হুমকি দিয়ে জামায়াত শিবিরের ক্যাডারদের ক্ষমতার দাপট প্রদর্শন করে এবং গোপনে রাবি ক্যাম্পাসে হত্যাযজ্ঞের নির্দেশ দেয়।
তার ঠিক ২ দিন পর ৮`ই ফেব্রুয়ারী রাতে সারা দেশ থেকে আসা জামায়াত শিবিরের ক্যাডার নিয়ে পৈচাশিক হামলা চালায় রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর এবং নির্মম ভাবে হত্যা করে ম্যানহোলে ফেলে রাখে আমাদের ভাই ফারুক হোসেনকে। তার রুমে ‘যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই’ সংবলিত পোস্টার টানানোর কারণে, রগ কাটে ফিরোজ ভাই, বাদশাহ ভাইসহ আরো অনেকের, গুরুতর আহত হয় আসাদ ভাই সহ আরও অনেকেই।
ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও মুহ মুহ গুলি আর বোমার শব্দে সেদিন অনুভব করেছিল জামায়াত শিবিরের বর্বরতা। পরদিন দুপুরে ফারুক ভাইয়ের জানাজার পর আমরা রাবি ছাত্রলীগ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই রাবি ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রশিবিরের শিকড় উপড়ে ফেলার জন্য, ছাত্রলীগের নেতৃত্বে গঠন করি সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য পরিষদ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নৈতিক সমর্থন পেয়ে আমরা খুব দ্রুতই ছাত্রশিবির মুক্ত একটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উপহার দিতে সক্ষম হয়েছিলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আপার এবং দেশবাসীকে।
ফারুক হত্যাকান্ডের ক্ষোভে ফুসে উঠেছিল সারা দেশের ছাত্রসমাজ। ফারুক হত্যার বিচার দাবির মিছিলে রাজপথ তখন উত্তাল। ফারুক হত্যার হুকুমের আসামি হিসাবে গ্রেফতার করা হলো জামায়াত ইসলামীর আমীর যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীকে, সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদকে। আর তখনই যুদ্ধাপরাধের বিচারের জোর দাবি ছড়িয়ে পড়েছিল দেশব্যাপী, তারপর শুরু হলো যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার অভিযান। আর স্বাধীনতা বিরোধী চেতনায় বিশ্বাসী সংগঠন জামায়াত-ইসলামী ছাত্রশিবির বিচ্ছিন্ন হলো সমাজ থেকে।
শহীদ ফারুকের আত্মা তখনই শান্তি পাবে যেদিন এই স্বাধীন বাংলার মাটিতে সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হবে এবং এই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা থেকে সকল স্বাধীনতা বিরোধী চক্র নির্মূল হবে।#