# ফজলার রহমান গাইবান্ধা থেকে………………………………………………
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প ”জমি আছে ঘর নেই” প্রকল্পের ঘড় দেয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা গ্রহণের অভিযোগে পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম লিপনকে প্রায় ঘন্টা ব্যাপি আটক রাখে ভুক্তভোগী মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে ২০ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ চত্বর নির্বাচন অফিসের সামনে।
ভুক্তভোগী মজনু মিয়া জানান, বিগত সময়ে প্রয়াত এমপি ডা: মো: ইউনুছ আলী সরকার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প ”জমি আছে ঘড় নেই” প্রকল্পের ঘড় দেয়ার কথা বলে আমি শ্রমিকলীগ নেতা সরোয়ার কবির মজনু, আমার কর্মী মাসুদ পোদ্দার, জাহিদুলসহ ১৭ জনের নিকট হতে ৩০ হাজার টাকা করে প্রায় ৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করে।
এদিকে ঘর দিতে না পারায় ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চেয়ে বছরের পর বছর উপজেলা আওয়ামিলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম সরকার লিপনের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিয়ে ব্যার্থ হয়। ভুক্তভোগীরা উপায় না পেয়ে ২০ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র অনলাইনে জমা দিয়ে ফেরার সময় উপজেলা পরিষদ চত্বর ত্যাগ করাকালে উপজেলা নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের সামনে তাকে আটক করে ১০/১১ জন ভুক্তভোগী। এ সময় তারা পথরোধ করে তাদের পাওনা টাকা দাবি করেন। পরে উৎসুক শতশত লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি অবলোকন করে। প্রায় ঘন্টা ব্যাপি আওয়ামী সভাপতি আটকের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান পলাশবাড়ী পৌরসভার মেয়র জননেতা গোলাম সারোয়ার প্রধান বিপ্লব। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে উপজেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম লিপন টাকা প্রদানের করে প্রতিশ্রুতি দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদে দায়িত্বরত আনছার সদস্য সুজন জানান, রাত দশটার পর নির্বাচন অফিসের সামনে লোকজনের গ্যানজাম হয়েছিল। যেহেতু আমাদের দায়িত্ব ইউএনও স্যারের নিরাপত্তা প্রদানের বিধায় আমরা সেখানে যাইনি। অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম লিপনের সহযোগী মোকলেছ মিয়া জানান, আমি শুধু মজনুর শশুড়বাড়ীতে ঘর দিতে চেয়ে মজনুর নিকট হতে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে আওয়ামীলীগের সভাপতি লিপন কে দিয়েছি। এটাই জানি তবে অন্য কারো নিকট টাকা নিয়েছে কিনা তা জানি না।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম সরকার লিপনকে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। উপজেলা আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মন্ডল বলেন ঘর দেয়ার কথা বলে টাকা গ্রহনের বিষয়টি আমি রাতেই শুনেছি। ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক ও সংগঠন পরিপন্থী। এতে আওয়ামিলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে আমি মনে করি। এ ব্যাপারে দলীয় হাইকমান্ডকে অবহিত করে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা আওয়ামিলীগ সহ সভাপতি আবু বকর প্রধান বলেন, ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক ও সংগঠন পরিপন্থী। এতে আওয়ামিলীগের ভাবমূর্তি যথেষ্ট ক্ষুন্ন হয়েছে বলে আমি মনে করি। তবে কোন ব্যাক্তির দায় সংগঠন নেবে না বলে আমি মনে করি না। পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুল হাসান জানান,গতকাল রাতে উপজেলা পরিষদে একটি ঘটনার কথা শুনেছি। তবে উক্ত বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। জেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, আমি বিষয়টি জেলার সাধারণ সম্পাদকসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামিলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে মন্তব্য করবো।
উল্লেখ্য পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামিলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম সরকার লিপনের বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী কাম দপ্তরি নিয়োগ দেয়ার কথা বলে ঘুষ গ্রহণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। তারা আওয়ামী লীগ দলীয় সভানেত্রী গণতন্ত্রের মানষ কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও প্রজ্ঞাবান দলীয় সাধারণ সম্পাদক প্রবীণ রাজনীতিবিদ ওবায়দুল কাদের মহোদয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।#