মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি : বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কালচারাল একাডেমি, রাজশাহীর উদ্যোগে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব “জিতিয়া পার্বণ-২০২৫” যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। এই উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা মাহালিপাড়ায় একাডেমির মিলনায়তনে আলোচনা সভা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমনা তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত সালমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মুণ্ডমালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক কামেল মাড্ডি সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জিতিয়া পার্বণ মাহালীসহ অন্যান্য পাহাড়ি সম্প্রদায়ের কাছে শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করা, সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণের এক গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। বিশেষত এই দিনে নারীরা উপবাস থেকে পরিবার ও সন্তানের মঙ্গল কামনা করেন, যা তাদের সংস্কৃতির এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে মাহালী তরুণ-তরুণীরা নিজস্ব লোকসংগীত, নৃত্য ও নাট্য পরিবেশনের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। তাদের পরিবেশনায় উঠে আসে পাহাড়ি জীবনের প্রকৃতি-নির্ভর সৌন্দর্য, সংগ্রাম ও লোকাচারের নানা দিক। পরে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।
প্রধান অতিথি লিয়াকত সালমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমাদের দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের নিজস্ব আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসবগুলোকে টিকিয়ে রাখতে হলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি রক্ষা ও বিকাশ জাতীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই ঐতিহ্য তুলে ধরা এখন সময়ের দাবি। উৎসবের পুরো আয়োজন জুড়ে উপস্থিত ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। নানা বর্ণের পোশাক, পাহাড়ি খাবার, লোকসংগীত ও সমবেত আনন্দগানে মিলিত হয়েছিল পাহাড়ি-বাঙালি সংস্কৃতির মিলনমেলা।#