স্টাফ রিপোর্টার: ৫ আগস্ট এর ছাত্র জনতার বিপ্লবী আন্দোলনের পর রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় শুরু হয়েছে জমিজমা বাড়ি ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক দখলের মত ভয়ংকর কর্মকান্ড। কিছুতেই থামছে না দখল দারিত্ব। বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ পর্যায় থেকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়ার পরও আওয়ামী ঘরনার অনেকেই রাজনীতির মোড়ক পাল্টিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। আর এতে সহযোগীর ভূমিকায় রয়েছেন কোন কোন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী।
বিএনপির ট্যাগ লাগিয়ে স্থানীয় কৃষকলীগ নেতা সেলিম রেজা বুদুর নেতৃত্বে দিন দিন বেড়েই চলেছে অন্যের জায়গা জমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ স্থাবর অস্থাবর সম্পদ জবরদখলের ঘটনা । ৫ আগস্ট এর পর সম্প্রতি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ডাহুকা গ্রামে এক ওয়াকফ্ সম্পত্তির দিকে নজর পড়েছে ভূমি খেকোদের। একদল ভূমি দস্যু প্রায় হাজার বিঘা ওয়াকফ্ জমি দখলে নিতে নানা রকম অপতাৎপরতা, জালিয়াতি এমনকি সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে । বিষয়টি নিয়ে চলতি বছর ১৩ই ফেব্রুয়ারি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহীর ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ ( ডিআইজি) বরাবর আবেদন করেছেন ওয়কফ্ সম্পত্তির মোতায়াল্লী ভুক্তভোগী মো: মামুন হোসেন সরদার। তিনি রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার শিরোইল এলাকার মৃত মইনুদ্দিনের ছেলে।
আবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াকফ্ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মোতায়াল্লী মনোনীত হয়ে দায়িত্ব পালন করছি। আমার দাদা মফিজ উদ্দিন সরদার নালিশী সম্পত্তিসহ অন্যান্য সম্পত্তি ১৯২১ সালে দলিল সম্পাদন করেন। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ওয়াকফ দলিল করে দেন। উভয় দিললে ময়েন উদ্দিন সরদারকে মোতায়াল্লী করা হয়। ১৯৭৩ সালে আমার পিতা আততায়ীর হাতে নিহত হলে আমার মা মোসা: ফাহমিদা বেগম নাবালক মোতায়াল্লীগণের পক্ষে অভিভাবক মোতায়াল্লী নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে এই সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে সোলেনামা মোতাবেক ওয়াকফ্ সম্পত্তি দুই ভাগে বিভক্ত হয়।
সোলেনামার শর্ত মোতাবেক আমি সহ আমার ভাই এমরান হোসেন সরদার, ইমামুল হোসেন সরদার ও মামুন হোসেন সরদার মোতায়াল্লী নিযুক্ত হয়ে সম্পত্তি সমূহ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় ভূমিদস্যু সেলিম রেজা বুদু, মো: বাবুল, মো: জেম বর্গা চাষীদের জমি ছাড়তে হত্যা সহ নানারকম ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন এবং জমি দখল করতে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছেন। কিছুদিন আগে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় জমি দখলের চেষ্টা করলে নিয়ামতপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। বরং একটার পর একটা অপকর্ম করেই চলেছে সন্রাসীরা। বর্তমানে আমাদের পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
ভুক্তভোগী সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২ মার্চ রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি ও নিয়ামতপুর থানায় আবেদন করেছেন ময়েন উদ্দিনের কন্যা সুরাইয়া ফৌজি নাজনীন সুলতানা। আবেদনে ওয়াকফ্ সম্পত্তিতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক জমির ফসল ও বাগান বিক্রির বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কৃষক লীগ নেতা বুদুর মুঠোফোনে বারবার ফোন করলেও তা বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাজাহান বলেছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আইনগত সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।#