# আলিফ হোসেন,তানোর………………………………………………………………
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই দরজায় কড়া নাড়ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকেরা গা-ঝাড়া দিয়ে উঠেছে। আড্ডা ও চায়ের কাপে উঠেছে আলোচনার ঝড়। এই নির্বাচন ঘিরে তানোর উপজেলায় শুরু হয়ে গেছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা। যদিও এখানো নির্বাচন থেকে দূরে সরে আছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে।বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা ভোটে আসবে কি না তা নিয়ে এখনি মুখ খুলছেন না। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে তানোর উপজেলা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে মেইন ফ্যাক্টর হয়ে উঠবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী।
তিনি সমর্থন দিয়ে যার পক্ষে মাঠে নামবেন বিজয় তারই প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। কারণ উপজেলায় গোলাম রাব্বানীর একটি বড় অঙ্কের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। অন্যদিকে তানোর পৌর মেয়র ইমরুল হক, মুন্ডুমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান, কলমা ইউপি চেয়ারম্যান খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরী, তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু ও কামারগাঁ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মসলেম উদ্দিন প্রামানিকের রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক।
ইতমধ্যে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে সমর্থন দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও বিএনপি-জামায়াতের বিপুল সংখ্যক ভোট তাদের সঙ্গে যুক্ত হবার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রবীণ-ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী যারা দীর্ঘদিন যাবত বঞ্চিত ও অবহেলিত রয়েছে। তারাও এবার তাদের অধিকার আদায়ে মামুনের পক্ষে একট্টা হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তানোরে আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মী-সমর্থক ব্যতিত অন্য কোন দলের পক্ষ থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার মনোভাব দেখা যায়নি। ইতোমধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না, ভাইস-চেয়ারম্যান সোনীয়া সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মাসুদ রানা চৌধুরী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, দলীয় প্রতীক উঠিয়ে দেয়ায় নির্বাচনী আমেজ ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না জনপ্রিয় নেতা সেটা নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নাই সবাই স্বীকারও করেন। তবে তার জনপ্রিয়তার বারোটা বাজিযেছে তার অনুগত একশ্রেণীর গভীর নলকুপ অপারেটর-কথিত সভাপতি ও অনুপ্রবেশকারি শিক্ষক নেতা। যারা পারিবারিকভাবে জামায়াতের রাজনীতির সঙে সম্পৃক্ত। অথচ হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা।গভীর নলকুপ অপারেটর ও কথিত সমিতির সভাপতিরা জমিদারদের উমেদারের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।তারা সাধারণ কৃষকদের আখ মাড়াইয়ের মতো মাড়াই করে রক্ত চুষে খাচ্ছে। তাদের কারণে কৃষক সমাজ বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। অধিকাংশক্ষেত্রে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কৃষকেরা প্রতিকার পাচ্ছেন না। এদের কারণে ভোটের মাঠে কৃষকদের মাঝে ময়নার জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের জৈষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে ময়নার শীতল সম্পর্ক নেতাকর্মীদের মনে অজানা আতঙ্কের সুত্রপাত হয়েছে। তানোরে যেখানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর কাছে প্রায় ৬ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন। সেখানে উপজেলা ভোটে প্রতিক ছাড়া নির্বাচনে ময়না কতটা সফল হবেন সেটা ভেবে নেতাকর্মীরা হতাশ। স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন মহল বলছে, এসব বিবেচনায় এবার উপজেলা নির্বাচনে গোলাম রাব্বানীর সমর্থন প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ে মেইন ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা বলছে, বর্তমানে ভোটের মাঠের যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাতে কলমা, বাধাইড় ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপিতে এমপি অনুসারীরা এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে তানোর এবং মুন্ডুমালা পৌরসভা, তালন্দ, সরনজাই,পাঁচন্দর ও কামারগাঁ ইউপিতে এমপিবিরোধী অনুসারীরা এগিয়ে রয়েছে। এমপিবিরোধী শিবিরে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী, সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ, সাবেক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুস সালাম, তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র ইমরুল হক,প্যানেল মেয়র আরব আলী,মুন্ডুমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান,কলমা ইউপি চেযারম্যান খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরী, তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু ও পাঁচন্দর ইউপি আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক বিজেন কর্মকারপ্রমুখ।
যাদের নিজস্ব একটা জনসমর্থন বা ভোট ব্যাংক রয়েছে। যার প্রমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেখা গেছে।এমপিবিরোধীদের দাবী রাজনীতিতে তাদের অস্থিত্ব ধরে রাখতে মামুনের বিজয় ব্যতিত কোনো বিকল্প দেখছেন না।#