শিবগঞ্জ আঞ্চলিক প্রতিনিধি………………………………..
শিবগঞ্জে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে গিয়ে হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন এক যুবতী নারী। গত ১৯ ডিসেম্বর শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের হাউসনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় প্রেমিক ফরহাদের মা-বাবা, ভাই-বোনসহ নিকটতম আত্মীয়স্বজনরা ওই নারীকে বেধড়ক মারধর, শ্লীলতাহানি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে অবশেষে বাড়ির এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে সুবিচারের আশায় ঐ নারী শিবগঞ্জ থানায় নিজের নিরাপত্তা ও হামলার ঘটনার প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
শিবগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ান জায়গীর গ্রামের মনিরুল ইসলামের মেয়ে মোসা. মুনিরা খাতুন (২১) এই হামলা ও প্রতারণার শিকার হয়েছেন। মনিরা জানায় বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার দফায় দফায় শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন ফরাদ। ঐ নারী বিয়ের জন্য চাপ দিলে ফরহাদ বিয়ে করতে নারাজ। ফরহাদ আলী (২৫) মনাকষা ইউনিয়নের হাউসনগর গ্রামের মো. মোস্তফার ছেলে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মনিরা খাতুনকে রাস্তা-পথে বিভিন্নভাবে উক্ত্যাক্ত সম্পর্ক না রাখলে বিষ খাব বলে ব্ল্যাকমেইল করছিল ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ফরহাদ। একপর্যায়ে মনিরাকে প্রেমের প্রস্তাব প্রদান করে। রাজি না হলে মনিরার ফোনে কল দিয়ে বিভিন্নভাবে জ্বালাতন করছিল অভিযুক্ত ব্যক্তি। পরবর্তীতে ফরহাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্ক থাকাকালীন সময় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার অবৈধভাবে শারিরীক সম্পর্ক করে ফরহাদ। এমনকি দু’ দু’বার বাচ্চা নষ্ট করে ওষুধ খাইয়ে।
ভুক্তভোগী মনিরা খাতুন বলেন, সম্পর্কের সূত্র ধরে একপর্যায়ে বিয়ের প্রস্তাব দিলে রাজি না হয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ফরহাদ। এমনকি নিরুপায় হয়ে তার খোঁজে ছুটে যান প্রেমিকার কর্মস্থল দাউদ কান্দী, কুমিল্লা ফায়ার স্টেশনে। ফরহাদ টের পেয়ে পালিয়ে যায়। ৫ দিন অপেক্ষা করার পরও খোঁজ মিলেনি প্রতারক ফরহাদের। ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন নিজ বাড়িতে ভুক্তভোগী নারী মুনিরা।
এমতাবস্থায় গত ১৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় ফরহাদের বাড়িতে বিয়ের দাবি নিয়ে গেলে পরিবারের লোকজন বেধড়ক মারধর করে। এসময় বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে শুরু করে। মনিরা বলেন, তাদেরকে গালিগালাজ করিতে নিষেধ করিলে আমাকে এলোপাথাড়ীভাবে লাথি, কিল,ঘুষি মারপিট করে আমার সারা শরীর জখম করে। নির্যাতিতা মনিরা ঘটনাস্থল থেকে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাজ্জাদ হোসেনকে ফোন করে বিষয়টি অবগত করলে তিনি দ্রুত থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার কথা বলেন।
মনিরা আরও বলেন, এমন কর্মকান্ডের ফলে আমার সম্মানহানী ও আমার ইজ্জত নষ্ট করেছে ফরহাদ। তাই থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি, পুলিশ প্রশাসন এর সুষ্ঠ তদন্ত করে ফরহাদসহ তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যাতে করে আমার মত আর কোন নারীর সঙ্গে এসব জঘন্যতম কাজ না করতে পারে।
এ বিষয়ে প্রতিবেদক জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন, বিএসপি(বার),এনডিসি,পিএসসি,জি,এম ফিল বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।#