# তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি………………………………………………………..
.রাজশাহীর তানোরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে বসে আনতে অগ্নি সংযোগের নাটক করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ছাঐড় গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসির মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে গ্রামবাসি এই মামলার সঠিক তদন্তের জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও লিগ্যাল এইডের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ছাঐড় গ্রামের মৃত তোফাতের পুত্র সিরাজ(৩৫) বাদি হয়ে একই গ্রামের এমদাদুলের পুত্র সবুজ(২৮) সহ মোট ৭ জনকে বিবাদী করে রাজশাহী বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-১ মামলা করেছেন। যাহার মামলা নম্বর ৪৬০সি/২০২৩। মামলার আরজিতে বলা হয়েছে এক নম্বর বিবাদী প্রায় তিন বছর পুর্বে অজ্ঞাত লোক মারফত মালেশিয়া যায়। সেখানে প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করে। কিছুদিন পুর্বে হঠাৎ এক নম্বর বিবাদী ফোন দিয়ে বাদিকে বলে সে আর মালেশিয়া কাজ করবে এবং তাকে গারমন্দ করে তখন বিবাদী হতভম্ব হয়। এক নম্বর বিবাদী দেশে ফিরে গত ১৫/০৯/২০২৩ তারিখ রাতে তিনিসহ বাঁকি ৬ জন মোট ৭ জন বিবাদী দলবদ্ধ হয়ে বাদির বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করেন।
অথচ প্রকৃত ঘটনা হলো বিবাদী ৩ বছর আগে নয় প্রায় ৩ মাস আগে বাদির মাধ্যমে মালেশিয়া যায় এবং দালালের খপ্পরে পড়ে। এছাড়াও বিবাদী গত ১৭/১০/২০২৩ তারিখ বাংলাদেশে আসেন। অথচ মামলার আরজিতে বলা হয়েছে বিবাদী গত ১৫/০৯/২০২৩ তারিখ বাদীর বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। বাদি সিরাজের পিতা তোফাত জীবিত তবে মামলায় দেখানো হয়েছে মৃত। এসব ঘটনায় প্রমান করে বাদি মিথ্যা মামলা দিয়ে বিবাদীদের ফাঁসাতে চাই। অন্যদিকে আরজিতে আরো বলা হয়েছে বিবাদী মশাল দিয়ে বাদির টিনের ঘরে আগুন দেয়, এতে ৫০ মণ জিরা ধান পুড়ে যায় যাহার মুল্য ৬৭,৫০০ টাকা, তিন মণ আতপ ধান যাহার মুল্য ৯০০০ টাকা, চার মণ সরিষা যাহার মুল্য ১২,০০০ টাকা এবং আসবাবপত্র পুড়ে যায় যাহার মুল্য এক লাখ টাকা।এছাড়াও ১০ বান্ডিল টিন পুড়ে যায় যাহার মুল্য ৮০০০০ হাজার টাকা।
স্থানীয়রা জানান, বাদির ওই পরিমাণ ফসল উৎপাদনের জমি নাই, এমনকি ১০ বান্ডিল টিনের ঘরের যে পরিমান জায়গা প্রয়োজন সেটা নাই, পরিত্যক্ত একটি মাটির ভাঙা ঘরে আগুন দিয়ে বাদি প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে বিবাদীদের ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা করেছে যেটা গ্রামের সকল মানুষ জানেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ছাঐড় গ্রামের তোফাত আলী ও তার পুত্র বাবুল হোসেন। তারা বাপবেটা একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা গ্রামের সহজসরল যুবকদের মোটা অঙ্কের টাকা বেতনের লোভ দেখিয়ে বিদেশ পাঠায়। এর পর বিদেশের মাটিতে তাদের জিম্মি করে দেশে পরিবারের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ইতিমধ্যে তারা এলাকার একাধিক ব্যক্তিকে বিদেশ পাঠিয়েছে। যারা কোনো কাজ না পেয়ে বিদেশের মাটিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এদেরই একজন ছাঐড় গ্রামের এমদাদুল হকের পুত্র সবুজ আলী। আদম ব্যাপারী ছাঐড় গ্রামের তোফাত ও বাবুল তারা বাপবেটা সবুজকে প্রায় ৩ মাস আগে মালেশিয়া পাঠায়। এর পর সবুজকে সেখানে জিম্মি করে পরিবারের কাছে থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এদিকে তাদের জিম্মি দশায় ঠিকমতো খাবার না পেয়ে সবুজ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। এখবর জানতে পেরে সবুজের পরিবার আবারো দালাল চক্রকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে তাকে দেশে ফেরত নিয়ে এসেছে। গত ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সবুজের বাংলাদেশে আসেন।
এদিকে সবুজকে বিদেশ পাঠানোর জন্য তার পরিবার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা ধারদেনা, ফসলী জমি ও গরু বিক্রি করে দালাল তোফাত ও বাবুলের হাতে তুলে দিয়েছেন। আর তাদের হাতে টাকা তুলে দিয়ে সর্বস্ব খুইয়ে প্রতারণার শিকার সবুজের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
স্থানীয়রা জানান, মুলত এই ঘটনা আড়াল ও ধাঁপাচাপা দিয়ে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতেই সিরাজ বাদি হয়ে সবুজদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে তোফাত আলী ও সিরাজ উভয়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অগ্নি সংযোগের ঘটনা সঠিক বিবাদী সবুজ গং এই অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছেন।#