আবুল কালাম আজাদ……………………………………………………………….
আচরণবিধি মানছেনা রাজশাহীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থীরাও। প্রতীক পাওয়ার আগেই পোস্টার ব্যানার টানানো ছাড়াও গাড়িবহর দিচ্ছেন সোডাউন। কেউ কেউ এরই মধ্যে শুরু করেছেন প্রচার-প্রচারণা। আগাম এ প্রচারণা নিয়ে অন্য প্রার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। সাধারণ ভোটারদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে রাজশাহী-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর বাইরে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কারো বিরুদ্ধে। ফলে শক্ত ব্যবস্থা না নেওয়ায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে বলে দাবি করেছেন অন্যান্য প্রার্থীরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী-৬ আসনের জন্য মনোনয়ন পেয়ে বুধবার বিকেলে রাজশাহীতে ফেরে বর্তমান এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তাঁকে বরণ করে নিতে চারঘাট-বাঘার কয়েক হাজার মানুষ গাড়ী বহর নিয়ে পুঠিয়ার বানেশ্বরে এসে ভিড় করে। এর পর গাড়ি বহরযোগে শাহরিয়ার আলমকে বরণ করে নিয়ে মিছিল মিছিল করতে চারঘাট হয়ে বাঘায় যান নেতাকর্মীরা। এসময় গাড়িতেও নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে করা ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়। আবার রাস্তার ধারেও ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়।
এ আসনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রায়হানুল হক রায়হান বলেন, ‘একজন প্রার্থী যেভাবে গাড়ীতে ব্যানার-ফেস্টুন লাগাইয়ে গাড়ি বহর নিয়ে সোডাউন দিলো, তাতে মনে হয় তিনি জিতে গেছেন। প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে এর মাধ্যমে। এটি নিশ্চয় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের সামিল। কিন্তু প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশন থেকে এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটি উগে¦জনক। তবে এ বিষয়ে যোগাযোগের জন্য শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
একইদিন দুপুরে রাজশাহী-৩ আসনের বর্তমান এমপি আয়েন উদ্দিন ঢাকা থেকে বিমানযোগে রাজশাহীতে এসে পৌঁছার পরে তাঁকেও কয়েক হাজার নেতাকর্মী গাড়ি বহর নিয়ে বরণ করতে আসেন। বিমানবন্দরের সামনেই রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক দখল করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া এমপি আয়েন উদ্দিন তাঁর সমর্থকদের মাঝে শান্তনার বক্তব্যও দেন। এমপি আয়েন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাকে ভালো বেসে মানুষের ঢল নেমেছিল বিমানবন্দর এলাকায়। কারণ আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। তাই হাজার হাজার মানুষ আমার পাশে আছেন এখনো। আমিও তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি।
এর একদিন আগে একই আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ ঢাকা রাজশাহীতে ফিরলে তাঁকেও কয়েক হাজার নেতাকর্মী গাড়িবহর নিয়ে বরণ করতে যান রাজশাহী বিমানবন্দরে।
এদিকে রাজশাহী-৩ আসনের নৌকার মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের পক্ষেও ব্যানার টানানো হয়েছে এলাকায়। নৌকায় ভোট চেয়ে কয়েকটি ব্যানার এরই মধ্যে তাহেরপুরের বিভিন্ন এলাকায় টানানো হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এটিও নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের সামিল বলে দাবি করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী তহুরা হক।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, কে বা কারা করেছে, সেটি বলতে পারব না। দীর্ঘদিন ধরে এখানে বর্তমান এমপির দুঃশাসন চলেছিল। সেটি থেকে মুক্ত হওয়ার খবরে এলাকার অনেক সাধারণ মানুষে ভালোবেসে আগে-ভাগেই হয়তো নৌকার ফেস্টুন ও ব্যানার টাঙ্গিয়েছে। আমি সেগুলো সরানোর ব্যবস্থা করবো।’
এর আগে প্রচারণা শুরু না হতেই তফশিল ঘোষণার পরদিনই নৌকার ভোট চেয়ে দলীয় সভা করেছিলেন রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরি। এ নিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘের অভিযোগে তাঁকে নির্বাচন কমিশন থেকে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, আমরা সেসব নিয়ে কাজ করছি। এর বাইরে ১১ জন ম্যাজিস্ট্রেটও আচরণবিধি নিয়ে কাজ করছেন।