শিবগঞ্জ সংবাদদাতা……………………………………………..
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দাইপুকুরিয়া ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামে আপন চাচাকে হত্যা মামলায় ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি, জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে আসার পরই আবারও নির্যাতন শুরু করেছেন মতিউর রহমান ওরফে মতি মহরিল নামের এক ব্যক্তি।
তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় শুরু করেছেন নির্যাতন-প্রতিশোধ ও জোরপূর্বক জমি দখল। দিচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি বলছে এলাকাবাসীর অভিযোগ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আদালতের, মহরিল সমিতির সদস্য মহরিল মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে।
দিনের বেলায় লাঠি দিয়ে প্রকাশ্যে পিঠিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী মতিউর রহমান ১৪ বছর জেলে থাকার পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পায়। এরপর থেকেই শুরু করেন প্রতিশোধের আগুন জোরপূর্বক জমি ও ভিটামাটি দখল। বাধা দিতে গেলেই হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন স্থানীয়দের।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় কয়েকটি পরিবারের অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে গত ১০ বছরে ৭-৮টি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন সরেজমিনে গিয়ে বেরিয়ে আসে তার বিরুদ্ধে একাধিক তথ্য। অভিযোগ রয়েছে,স্থানীয়রা কেউ তার ভয়ে কথা বলেন না। মুখ খুললেই হতে হয় মিথ্যা মামলা ও হামলার স্বীকার।
বর্তমানে মতিউর রহমান ওরফে মতি মহরিলের ভয়ে আতঙ্কে দিন পার করছেন সেখানকার স্থানীয়রা। এমনকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে প্রভাবিত করেও জোরপূর্বক জমি ও বাড়ি দখলের অভিযোগ রয়েছে মতি মহরিলের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, মতিউর রহমান ওরফে মতি মহরিলের এসব অবৈধ কাজের মূল পরিকল্পনাকারী তার ভাই মো. এম আলী। একাজে তাকে সহযোগিতা করেন, মতিউর মহরিলের ভাই সবুর আলী, আরেক ভাই মনিরুল ইসলাম মনি, মতিউরের ছেলে সুজন আলী, সবুর আলীর ছেলে হিমন আলী ও ফয়সাল আলী, মৃত আকবর আলীর ছেলে নওশদ আলী, নেজাম উদ্দিনের ছেলে তৈইমুর রহমান, মৃত জয়নাল আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান, এম আলীর ছেলে খাইরুল ইসলাম।
অভিযোগে জানা যায়, কখনও নিজে আবার কখনও ভাই বা ভাতিজাদের বাদী করে স্থানীয়দের নামে এসব মিথ্যা বানোয়াট মামলা করেন মতিউর রহমান মতি মহরিল। চলতি বছরের গত পহেলা আগষ্ট তার লোকজন নিয়ে মনিরুল ইসলাম মন্টুর বাড়ি দখলে য়ায় মতিউর রহমান ওরফে মতি মহরিল ও তার লোকজন। এসময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক দখলে যায় তারা। বাধা দিতে গেলে নারীদের উপরেও ভয়াবহ হামলা করে মতি মহরিল ও তার লোকজন। সেটি ছিলো কোটের রায়। তাদের দুই পক্ষের এ ঘটনায় আহত হয়, মতিউর রহমান মন্টুর ছেলে সবুজ আলী, মেয়ে মনিরা খাতুন ও ভাতিজাবউ সাবিনা ইয়াসমিন গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্বার করে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে আদালতে শরণাপন্ন হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী মতিউর রহমান মন্টু। এই মামলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যাদেরকে সাক্ষী করা হয়, তাদের নামেও মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দেন মতি মহরিল। এছাড়াও তাদেরকে নারী নির্যাতনের মতো স্পর্শ কাতর মিথ্যা দিয়ে জেলা খাটিয়েছে মতি মহরিল বেরিয়ে এসেছে সরেজমিনে গিয়ে। মতিউর রহমান ওরফে মতি মহরিলের মিথ্যা ও বানোয়াট মামলার স্বীকার হয়েছেন, শিবগঞ্জ উপজেলার দাইপুকুরিয়া ইউনিয়নের আড়গড়াহাট পলাশবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে মনিরুল ইসলাম ওরফে মন্টু, তার ভাই মো. লিটন আলী, ছেলে সবুজ আলী, আতিকুর রহমান, মৃত ফাকির উদ্দিনের ছেলে রফিক আলী ও বাইরুল আলী, রফিক আলীর ছেলে খাইরুল ও সাইরুল, মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে মো. মাসুদ, মৃত মহফুল আলীর ছেলে মো. আখতারুল, তোফাজ্জল ওরফে পাতানের ছেলে সুবেদ আলী, শহিদুল আলীসহ অজ্ঞাতনামা অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মতিউর রহমান ওরফে মতি মহরিল ও তার ছেলে সুজন আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা নয়, বরং তারাই আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। আমরা তাদের সঙ্গে মীমাংসা করে নিতে যে কোন মুহূর্তে প্রস্তুত রয়েছি। শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ জানান, থানায় কোন জমিজমা সংক্রান্ত মামলা নেয়া হয়না। এবিষয়ে আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা চলমান রয়েছে তাদের দুই পক্ষের তদন্ত সাপেক্ষে আদালত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন। যেকোনো ঘটনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছেন।
উল্লেখ্য,ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বার মোড়ল মাতব্বর ও স্থানীয়দের দাবি,আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনই মতি মহরিল ও তার বিপক্ষের লোকজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আগামীতে বড় ধরনের র্দুঘটনা ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ঐ ইউনিয়নে,পলাশবাড়ী গ্রামে এখনই দ্রুত কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি সেখানকার স্থানীয়দের।#