সবুজনগর ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন।(কিন্তু) নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে বিলম্ব ঘটলে এবং মানবিক সহায়তার ঘাটতি হলে পুরো অঞ্চলটি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। আজ সকালে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে (জেসিসি) ‘১৮তম ইস্ট এশিয়া’ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন এবং তিন দিনব্যাপী ‘৪৩তম আসিয়ান’ শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনের আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি একথা বলেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব।
রাষ্ট্রপতি সুস্পষ্টভাবে বলেন, সঙ্কটের সাত বছরেও আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সমাধান চোখে পড়েনি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতি এবং ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদো আজকের এই ১৮তম ‘ইস্ট এশিয়া’ শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং সংলাপ অংশীদাররা, আসিয়ানের মহাসচিব, মন্ত্রী এবং সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সংলাপ অংশীদারদের প্রতিনিধিগণও এতে অংশ নেন।
এই মেয়াদে আসিয়ানকে প্রশংসনীয়ভাবে পরিচালনা করার এবং সুন্দর জাকার্তায় উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য বর্তমান আসিয়ান চেয়ার-ইন্দোনেশিয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আসিয়ানের সাথে সম্পর্ক বাড়াতে এবং সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।
বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আন্তঃদেশীয় নিরাপত্তা বিষয়ে ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ অনেক খাত রয়েছে যেখানে আসিয়ান এবং বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, “আমরা যদি আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারের মর্যাদা পাই, তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা, আঞ্চলিক বাজারে প্রবেশাধিকার, বর্ধিত আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা ও সংহতি এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে জনগণের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক শক্তিশালী হবে।
তিনি আরও বলেন, আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার মর্যাদা উভয় পক্ষের জন্য যথেষ্ট সুযোগ উন্মুক্ত করবে এবং আসিয়ানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ককে উন্নীত করবে।
পারস্পরিক মূল্যবোধ এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ফোরামে বিকশিত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এটি ছয়টি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করেছে এবং আরও বেশি কিছুর সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
শত বছর ধরে বাণিজ্য দ্বারা সংযুক্ত এই অঞ্চলটি এখনও বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ প্রবাহের কেন্দ্রে রয়েছে এবং আইওআরএ বেশিরভাগ উদীয়মান সংযোগ বিকল্প থেকে সুবিধা পেতে পারে এবং আসিয়ান এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আসিয়ান এবং আইওআরএ’র মধ্যে সদ্য স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি এটিকে পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতা বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছেন।
রাষ্ট্রপতি তার লিখিত বক্তব্যের শুরুতেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ একটি রূপান্তরমূলক যাত্রা করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রায় সব ক্ষেত্রেই অসাধারণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
এদিকে অনুষ্ঠানের ফাঁকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
তাঁরা হলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন এবং লাও পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকের প্রধানমন্ত্রী সোনেক্সে সিফানডোন। রাষ্ট্রপতি বিশ্ব নেতাদের সাথে আলাদাভাবে কুশল বিনিময় করেন ।#
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: রোকনুজ্জামান রোকন নির্বাহী সম্পাদক: ইফতেখার আলম সম্পাদক কর্তৃক উত্তর নওদাপাড়া, পো: সপুরা, রাজশাহী-৬২০৩ থেকে প্রকাশিত। মোবাইল: ০১৭১১-২০৮ ১৭২, ০১৮৩৪-৮৬১ ০০৭ ইমেইল: [email protected]
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ নগর