# আব্দুল বাতেন, শিবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকার ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ সরকারী সফরে এসেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ও রেলওয়ের আলোচিত জামাই মো: মামুমুল ইসলাম।শিবগঞ্জ উপজেলায় রেলের কোন অবকাঠামো না থাকায় তার এ সফর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর সরকারি দুইটি গাড়িতে সরকারী সফরে এসেছেন বলে জানা গেলেও তার দপ্তর কোথায় সফরে গেছে তা বলতে পারেনি।তিনিও এ নিয়ে গণমাধ্যমের সংগে কথা না বলে উল্টো অসাদাচরন করেন।
মঙ্গলবার(৮ এপ্রিল) দুপুরে সড়ক পথে দুটি সরকারি গাড়িতে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ স্থল বন্দরের জিরো পয়েন্ট সীমান্ত এলাকা, ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ সহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। পরে দুপুরে তিনি পর্যটন মোটেলে যাত্রা বিরতি করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার পরিবারের সদস্যসহ ৮ জন।
ছোট সোনামসজিদ চত্তরে ভিডিও ধারনের সময় স্থানীয় এক সাংবাদিক তার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি তার সাথে খারাপ আচরণ করেন।এ সময় তিনি ধারণ করা ভিডিও মুছে ফেলার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এ নিয়ে তাকে তার ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি । এমনকি খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, পাকশি থেকে তিনি রাজশাহী পৌছেন সকাল প্রায় সাড়ে ১০ টার দিকে।এরপর সড়কপথে দুটি সরকারী গাড়িতে করে বোরখা পরিহিত ২ জন মহিলা, ২ টি শিশু, একজন গানম্যান,২ জন পুরুষ মানুষ এবং তিনি বেলা পৌনে একটার দিকে ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ চত্তরে নামেন। স্থানীয়দের ধারনা পুরুষ ২ জনের একজন তার সন্তান হতে পারে।
শিবগঞ্জ উপজেলায় রেলের কোন অবকাঠামো না থাকলেও তিনি কি প্রকল্প দেখতে শিবগঞ্জের সোনামসজিদে এসেছেন তার উত্তর দিতে পারেনি কেউ। চাঁপাইনবাবগঞ্জে রেলের কোন সরকারি অনুষ্ঠান বা মহাব্যবস্থাপকের সোনামসজিদে কোন কর্মসূচি আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ^াস জানান, এ ধরনের কোন কর্মসূচি আমার জানা নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অবস্থান করছে এবং তিনি এ বিষয়ে জানেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,’ আমি এ বিষয়ে অবগত নয়’। তবে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি তার পার্সোনাল সেক্রেটারির সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। এই ব্যাপারে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক এর পার্সোনাল সেক্রেটারি মেহেদী হাসানকে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি অফিসে আছি তবে স্যার অফিসে নেই। রেলের প্রজেক্ট পরিদর্শনে তিনি বাইরে আছেন। কোথায় এবং কি প্রজেক্ট পরিদর্শনে গেছেন সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
তিনি ছুটিতে না সরকারী কাজে বাইরে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, রেল বিভাগের অনেক প্রজেক্ট রয়েছে। তিনি কোথায় গেছেন তা তার জানা নেই। তবে তিনি ছুটিতে নেই বলে নিশ্চিত করেন। মহাপরিচালক এর সাথে তার পরিবারের সদস্যরা গেছেন নাকি এমন প্রশ্নের উত্তর ও তিনি এড়িয়ে যান। এরপর ঐ কর্মকর্তাকে সোনামসজিদে রেলের কোন স্থাপনা না থাকার পরেও এখানে কি প্রজেক্ট দেখতে এসেছিলেন মহাব্যবস্থাপক এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে সংযোগ কেটে দেন।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের আলোচিত সেই জামাই মামুনুল ইসলাম রেলের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) পদে চারজন সিনিয়রকে ডিঙ্গিয়ে পদোন্নতি পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে পতিত সরকারের প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় ব্যপক দুর্ণীতির কারণে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছে তার দপ্তরেই সমালোচনা। এর আগে মামুনুলের ইসলামের শ্বশুর সাবেক রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আমজাদ হোসেন তাকে এ পদে বসানোর পরই জুলাই আন্দোলনের পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।#