নাজিম হাসান,রাজশাহী:
রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিসহ ১২ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন গতকাল সোমবার (২০ জানুয়ারী) সকাল থেকেই আরো বেগমান হয়।
অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমানের পদত্যাগ না করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা মেইনগেট, একাডেমি ভবন ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে ক্যাম্পাস চত্ত¡রে বিক্ষোভ করতে থাকে। একই সময় ক্লাস চালু রাখা,কলেজের মধ্যে বিক্ষোভ করে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাল্টা বিক্ষোভ করেন। দু’পক্ষের বিক্ষোভে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এক পর্যায়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও রাজপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় প্রশাসনিক ভবনের ভিতরে প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা ও ক্যাশিয়ার মাহিদুল ইসলাম অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের অধ্যক্ষা দুর্নীতিগ্রস্ত, স্বৈরাচারী ও আওয়ামীদোসর। অধ্যক্ষর এমন অনৈতিক ও দুর্নীতিমূলক কার্যকলাপের জন্য কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। তাঁর দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীতা ও শিক্ষার্থীদের প্রতি বিরূপ আচরণ প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক ও অবকাঠামগত উন্নয়নকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের সুনাম এবং ঐতিহ্য ক্ষুন্ন হচ্ছে। অধ্যক্ষের অপশাসনের ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক এবং মানসিকভাবে চরম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের ৩য় বর্ষের বিএসসি ইন নার্সিং চূড়ান্ত পরীক্ষা গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ জানুয়ারী এ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এ পরীক্ষায় রাজশাহী নার্সিং কলেজ থেকে ১৪জন শিক্ষার্থী কমিউনিটি হেলথ্ বিষয়ে ফেল করে। ফেল করার বিষয়টি ১৪জন শিক্ষার্থী জানতে পেরে ১৬ জানুয়ারী কলেজের অধ্যক্ষের রুমে তালা ঝুলিয়ে দেয়। একই সাথে তারা অধ্যক্ষের নামের আগে আওয়ামী লীগের ট্যাগ জুড়ে দিয়ে তার অপসরণ দাবি করে আল্টিমেটাম দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের এই আন্দোলন ১৭ই জুলাই থেকেই শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের এই আওয়ামীদোসরের পদত্যাগের আন্দোলনকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করার জন্য নিছক একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কোনো প্রকার গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন এই শিক্ষার্থী।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ ফেল করা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন ও তাদের কথা শোনেন। তাদের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন পরিচালক। পরে বিক্ষোভ কারী শিক্ষার্থীরা নার্সিং কলেজ ছেড়ে চলে যায়।
এবিষয়ে রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমান বলেন, যারা ফেল করার পরের দিনই আমার কক্ষে তালা দিয়েছে। আমি তাদের সাথে আলোচনায় বসতে চেয়েছি কিন্তু তারা আমার সাথে বসেনি। আমার সাথে তাদের বসা উচিৎ ছিল। তা না করে আমার কক্ষে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃংখলা করার বিক্ষোভ করার মত কোনো কিছু নেই। কারণ আগামী ৪০ দিনের মধ্যে ফেল করা শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে। ফেল করা শিক্ষার্থীরা কলেজে যে কান্ড ঘটিয়েছে তা খুবই দুঃখজনক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।#