বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘায় গভীর রাতে র্দুবৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে গেছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি (আদিবাসি)’র শিব মন্দিরের একাংশ। আগুন নেভাতে গিয়ে আরবি অক্ষরে লেখা চিরকুট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মন্দির কমিটির নেতারা। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার বাঘা পৌরসভার বলিহার গ্রামের শিব মন্দিরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।
রাত অনুমান ২ টার দিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের কবিতা রানী প্রকৃতির টানে সাড়া দিয়ে বাইরে বের হয়ে আগুন দেখতে পেয়ে আগুন-আগুন বলে চিৎকার দেন। পরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের লোকজন পানি ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রন করেন। পরে আরবি অক্ষরে লেখা চিরকুট পান। জানা যায়,মন্দিরটি এ বছর উপরে টিনসেট ও চারিদিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। উদ্ধার করা চিরকুটে লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মদুর রাসুল্লাহ লেখা ছিল বলে জানা গেছে।
শিব মন্দিরের সভাপতি সত্যেন্দ্রনাথ মল্লিক জানান, আগুন নেভাতে গিয়ে আরবি অক্ষরে লেখা চিরকুট তাদের নজরে আসে। তবে চিরকুটে কি লেখা ছিল তা তাদের জানার বাইরে। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শিবমন্দিরের আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে বলে মন্তব্য তার।
তিনি জানান, বিগত সরকারের আমে ৭৯ শতাংশ খাস জমির মধ্যে সাড়ে ৬৭ শতাংশ জমি ১৫ জন নৃগোষ্ঠীর (আদিবাসী )পরিবারের নামে বরাদ্দ দিয়ে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করে দেন। বাস্তবে তাদের ভোগ দখলে রয়েছে ৪২ শতাংশ জমি। তাদের বরাদ্দ দেয়া জমির দুই শতক জায়গার সার্বজনীন শিব মন্দির স্থাপন করা হয়। তার দাবি অবশিষ্ট জমি, স্থানীয় মুসলিম পরিবার নুর মোহাম্মদ এর ওয়ারিশগণ ভোগ করছেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বাঘা উপজেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক অপূর্ব কুমার সাহা জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাম্মী আক্তার, রাজশাহী জেলা সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম, চারঘাট সার্কেলের এ.এস.পি আব্দুল খালিদ, বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ.ফ.ম আসাদ্দুজ্জামানসহ স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বাঘা উপজেলা কমিটির সভাপতি সুজিত কুমার পান্ডে (বাকু) জানান, তারা মন্দির কতৃপক্ষকে থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন।
বৃহসপতিবার(০১-০৫-২০২৫) কথা হলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফকরুল ইসলাম বাবলু ও বাঘা পৌর জামায়াতের আমির সহকারি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম জানান, দুর্বৃত্তরা যেই হোক তাদের আইনের আওতায় নেওয়া হোক। ধর্মীয় সম্পীতি বিনষ্ট হোক তা তাদের কাম্য নয়। মরহুম নুর মোহাম্মদ পরিবারের ওয়ারিশগনের একজন বাবু সরকার জানান, আমাদের বাড়ির পাশে সরকারের ৭৯ শতাংশ খাস জমি রয়েছে। ১৯৬৮ সালে আমার দাদা নুর মোহাম্মদ সরকারের নামে ৯৯ বছরের জন্য ওই জমিটি লিজ প্রদান করেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক। যা আমাদের ভোগ দখলে ছিল। কিন্তু আ’লীগ সরকারের আমলে জোর পূর্বক গুচ্ছ গ্রাম স্থাপন করা হয়। এ বিষয়ে আদালতে মামলা করেছি। তবে বুধবার রাতে কে-বা কাহারা মন্দিরে আগুন দিয়েছে, তা তাদের জানা নেই।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)আ.ফ.ম আছাদুজ্জামান জানান,আগুনে বাঁেশর একটি খুঁটি ও বেড়ার কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ বিষয়ে মন্দির কমিটির সভাপতি সত্যেন্দ্রনাথ মল্লিক বাদি হয়ে মামলা করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাম্মী আক্তার বলেন,ভুক্ত ভুগিদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একই সাথে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট না হয়, সে বিষয়েও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের পরামর্শ দিয়েছি।#
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: রোকনুজ্জামান রোকন নির্বাহী সম্পাদক: ইফতেখার আলম সম্পাদক কর্তৃক উত্তর নওদাপাড়া, পো: সপুরা, রাজশাহী-৬২০৩ থেকে প্রকাশিত। মোবাইল: ০১৭১১-২০৮ ১৭২, ০১৮৩৪-৮৬১ ০০৭ ইমেইল: [email protected]
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ নগর