বিশেষ প্রতিনিধি………………………………………………………………..
মাদক,ইমো হ্যাকিং মুক্ত সমাজ ও নাট্যকার পরিচালক শিমুল সরকারের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে গড়গড়ি বাঘার সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকের ব্যানারে রাজশাহী বাঘার গড়গড়ি ইউনিয়নের দাদপুর-গড়গড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বাঘা থেকে ইমো হ্যাকার ও মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মুলসহ শিমুল সরকারের সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবি জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টায় প্রতিবাদী গানের মাধ্যমে এই মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়।
ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অপরাধ কর্মকান্ডের বিচার দাবি করে তাদের বক্তব্যে বলেন, নাট্যকার পরিচালক শিমুল সরকারের উপর হামলায় দায়ের করা মামলার আসামীদের বেশির ভাগই ইমো হ্যাকার। হাফিজ এবং শাহীনের নেতেৃত্বে এলাকায় ইমো হ্যাকার এবং মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট পরিচালনা করে। তারা দামি মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়ায়। সেই গাড়ি চালানোর জন্য ডাইভারও রেখেছেন। তাদের অনেকেই নিজেকে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দেন। এদের একজন শাহীন পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের চাঁদাবাজিতে লিপ্ত থাকে সবসময়। এলাকার প্রতিটি মানুষ তাদের কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ।
শিমুল সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এইসকল অসামাজিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে মুখর ছিলেন বলে আগে থেকেই নানান হুমকি দিয়ে আসছিল তারা। শিমুল সরকার নিজেও এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন লাঠিতে ভর দিয়ে।
তিনি জানান, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিন রাতে আমার উপরে যে হামলা হয়েছে তা নিয়ে নানা রকম মিথ্যাচারে আমি অবাক এবং ক্ষুব্ধ। একটি সংঘবদ্ধ ইমো হ্যাকার এবং মাদক কারবারী চক্র বাঘা উপজেলার নিজ গ্রাম সরেরহাট বাজারে ৫/৬ টি বাইক নিয়ে চাইনিজ কুড়াল, হাতুড়ি, লোহার রড নিয়ে আক্রমণ করে। তাদের হামলায় মাথার পিছনে রক্তাত্ত জখম, হাতুড়ি পেটায় শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত প্রাপ্ত হন। আমার চিৎকার শোনা না যায়, সেজন্য বাইকের ফুল পিকাপ এবং উচ্চস্বরে হর্ণ এর সাউন্ড দিয়ে অভিনব কায়দায় হামলা চালায়। জ্ঞান অবস্থায় ছিলাম বলে ওদের সবাইকেই চিনে ফেলেন। ওরা গালাগালি করে বলছিল “ভাই এর সাথে পাঙ্গা নিস?” শিমুল সরকারে প্রশ্ন এই ভাই কে? তাকে বাচাতে এগিয়ে আসা এক ভাতিজা সে দৃশ্য পুরোটা দেখেছে। অন্য দুই তিন জন অর্ধেক দেখেছে।
তিনি বলেন, কয়েকদিন পূর্বেই মালার এক আসামি মাসুম মানিকগঞ্জের এক লোকের পৌনে চার লাখ টাকা মেরে দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়। আসামি আরিফুল ইমো হ্যাকিং এর আরেক মামলায় গ্রেফতারের পর এখন জামিনে। এই গ্যাং বাঘা ভারত সীমান্তের ছয় সাম এলাকা দিয়ে ফেন্সিডিলের ব্যবসার সাথেও জড়িত বলে অনেকেই বলেছেন। ঢাকা থেকে এদের পরিচালনা করে হঠাৎ ধনী বনে যাওয়া এক বড় ভাই। এই সকল অবৈধ ব্যবসা করে ঢাকায় দুটি বাড়ি, এলাকায় ৩০ বিঘার এক বাগান বাড়ি, রাজশাহী শহরে জমি সহ অনেক কিছুই করে ফেলেছে।
শিমুল সরকার বলেন, আমার উপরে হামলার বিচার না হলে না হোক, কিন্তু সমাজ থেকে এই সকল গডফাদার এবং সাইবার ক্রাইম, মাদক চক্র যেন ধ্বংস হয়।
তিনি আরও জানান, হামলার রাতেই টেলিভিশন নাটকের পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগর সেই কথিত গড ফাদারকে ফোন দিলে সে বলে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, খরচ যা লাগে আমি দিচ্ছি। এতে বুঝে নিতে কারও কোনো সমস্যা হবার কথা নয় যে সে কেন চিকিৎসা খরচ দিতে চায়?
মানববন্ধনে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মন্ডলীর সাবেক সদস্য সাহাবুদ্দিন, প্রভাষক জিয়াউল হক বাবুল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান চান্দু, গড়গড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সহ সভাপতি সুমন আহমেদ, বাঘা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সানোয়ার হোসেন সুরুজ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি রাতে নাট্যকার পরিচালক শিমুল সরকারের উপর হামলার ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামী করে বাঘা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এদের মধ্যে ৫জন জামিন নিয়েছেন। পরে আবারো হামলার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় পৃথক দু’টি জিডিও করা হয়েছে।
আসামীদের একজন শাহিনুর রহমান শাহিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ,হামলার সাথে জড়িত নন বলে দাবি করেন। হাফিজুর রহমান ওরফে হাফিজের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওযা যায়। এদিকে পৈশাচিক হামলার প্রতিবাদে ঢাকা থেকে নাটকের বড় সংগঠনগুলো প্রতিবাদ এবং বিচার চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছে। তারা এটাও জানিয়েছেন যদি অপরাধী চক্রের বিচার না হয় তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে।##