শাহীন আলম লিটন, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি !!!
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে পদবঞ্চিত নেতাদের অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার। সংবাদ সম্মেলন থেকে জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘পদবঞ্চিত ব্যানারে জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। তারা বলছে জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা কুষ্টিয়ায় চালকলমালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করার জন্য চালের দাম বেড়ে গেছে—এ কথা পাগল আর আহাম্মক ছাড়া কেউ বিশ্বাস করবে না। এ ব্যাপারে আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, কোনো চালকলমালিক যদি বলতে পারেন আমরা তাঁদের কাছে চাঁদা চেয়েছি, তাহলে আমরা দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াব।’
জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘তাঁরা (পদবঞ্চিতরা) বলছেন স্থানীয় মদের দোকান থেকে জেলা বিএনপির নামে মাসে দুই লাখ করে টাকা নেওয়া হয়। এরপর বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের স্ত্রীকে বাদ দিয়ে স্বৈরাচারের শাসনামলে কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠিত লালন বিজ্ঞান ও কলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে। সেখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও আমি মালিকানা নিয়েছি।’ এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই উল্লেখ করে এই অপপ্রচারের সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে আঁতাত করে বিলাসী জীবন যাপন করা ব্যক্তিরা ৫ আগস্টের পর এখন জেলা বিএনপির নেতা সাজার চেষ্টা চালাচ্ছেন। স্বৈরাচারের আমলে জেলার শত শত বিএনপির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় কেউ কেউ কারাগারে আবার অনেকেই পলাতক থেকে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন। স্বৈরাচারের দোসররা তাদের ওপর চালিয়েছে অকথ্য নির্যাতন। সেদিন তাদেরকে সাহায্য–সহযোগিতা করার কেউ ছিল না। আমরা সেদিন নিজেরা বিপদে থেকেও সাধ্যমতো বিপদগ্রস্ত নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আর তাই কর্মীদের মনের কষ্ট বুঝেই হয়তো কেন্দ্রীয় বিএনপি কুষ্টিয়াতে আমাদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, যখন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির প্রতি মানুষের আগ্রহ ও আস্থা বাড়ছে, তখন একসময়ের বিতর্কিত কতিপয় ব্যক্তি স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যাঁরা আজ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাঁদের অতীত কর্ম আপনাদের জানা আছে। কারা অতীতে সাবরেজিস্ট্রি অফিস থেকে, বালুমহল থেকে চাঁদাবাজি করতেন। কে বা কারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি লুটেপুটে খেতেন? কারা চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জিকে, জেলা পরিষদ, সিভিল সার্জন অফিস, জেনারেল হাসপাতাল ও জেলখানায় টেন্ডার–বাণিজ্য করে কোটি টাকার মানুষ বনে গেছেন? অতীতে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যাঁরা চাঁদাবাজি-লুটপাট করতেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে থেকে এখন বিএনপির নেতা সাজার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বিএনপির পদ পেলে তাঁরা আবার হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে চাঁদাবাজি আর লুটপাট করতে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ, সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার, যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম আলমসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা বলেন, পদবঞ্চিত ব্যানারে কতিপয় চিহ্নিত ব্যক্তি কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাঁদের অশালীন বক্তব্য ও প্রচারণায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেমন মর্মাহত, তেমন ক্ষুব্ধ। এসব বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি নেতারা আরও বলেন, ‘অনেক ধৈর্য ধারণ করেছি, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অবিলম্বে তাদের অশালীন বক্তব্য ও মিথ্যাচার পরিহার করে দলের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#