# মেহেরুল ইসলাম মোহন, লালপুর, নাটোর.................................
নাটোরের লালপুরে গত বছরের তুলনায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাটের চাষ ও বাম্পার ফলন হলেও পাটের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা পড়েছেন হতাশায়। লাভের আশায় অধিক খরচ করে পাট চাষ করে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় দিশেহারা তাঁরা।
শনিবার(৩রা সেপ্টেম্বর-২০২২)লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া, মনিহারপুর, নওপাড়া, মোহরকয়া কয়লার ডহর, পদ্মার পাড়, বসন্তপুর বিল, মোমিনপুর, বিলমাড়ীয়া সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা কেউ কেউ জমি থেকে পাট কাটছে, জাগ দিচ্ছে আবার কেউ কেউ জাগ দেওয়া পাঠকাঠি থেকে সোনালী আঁশ ছাড়াচ্ছ, অনেকে আবার পাটকাঠি থেকে ছাড়ানো সেই সোনালী আঁশ শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এ সময় পুরুষের পাশাপাশি নারী-শিশুরাও হাতে হাত লাগিয়ে কাজ করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে মনিহারপুর এলাকার পাটচাষী রবিউল ইসলাম বলেন,এক বিঘা জমি তৈরিতে ৩বার চাষ করেছি। বীজ-সার ও কীটনাশক, নিড়ানি-পরিচর্যা,পাট কাটা ও জাগ,পাট জাগ দিতে পুকুর ভাড়া,আঁশ ছাড়ানো,পরিবহন ও অন্যান্য খরচসহ ১ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে মোট ১৯ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। পাটের আঁশ ছাড়ানোর শ্রমিক আব্দুল মজিদ জানান, প্রতিদিন ৩৫০- ৪০০ টাকা মজুরিতে ভোর ৬টা থেকে বেলা দেড়টা-দুইটা পর্যন্ত কাজ করেন। এতে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। জিনিস পত্রের দাম বাড়লেও তাঁদের মজুরি বাড়েনি। আবার কৃষকদের লোকসান দেখে তাঁদেরকেও কিছু বলতে পারছেন না তাঁরা।
নওপাড়া গ্রামের স্থানীয় আলতাব হোসেন বলেন, এ বছর বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমানে বৃষ্টির পানি না হওয়ায় খালবিলে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে বিপাকে পড়েন তাঁরা।এ বছর পাটের উৎপাদন খরচ বিঘা প্রতি হয়েছে ২০থেকে ২২ হাজার টাকা। ফলন হয়েছে ৭ থেকে ৮ মণ। বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১৬ হাজার থেকে ২১হাজার টাকায়।চাষিদের বিঘাপ্রতি লোকসান গুনতে হচ্ছে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। আর যারা জমি লিজ নিয়ে পাট চাষ করছে বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকারবেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে। ভেল্লাবাড়ীয়া বাজারের স্থানীয় পাট ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন ও আব্দুল জাব্বার বলেন, এ বছর এলাকায় ভালো মানের পাটের উৎপাদন খুবই কম হয়েছে। তাই জুট মিলে চাহিদা কম থাকায় দাম কম পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি মণ পাট মান অনুপাতে ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬০০ টাকায় কিনছেন।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী বলেন,এ বছর কৃষকেরা পাট চাষ করে বিপদে পড়েছেন। ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় সোনালি আঁশে আগ্রহ হারাচ্ছেন। সেই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমিকদের জীবনযাপনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এ ক্ষেত্রে পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর অধিক খরা আর অনাবৃষ্টিতে পাটের উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি পড়েছে। পুকুর-ডোবা-নালায় পানি সংকটের কারণে যত্রতত্র স্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি তুলে জলাবদ্ধ সৃষ্টি করে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের গুণগত মান ও রং ভালো না হওয়ায় কৃষকেরা দাম পাচ্ছেন না।#
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: রোকনুজ্জামান রোকন নির্বাহী সম্পাদক: ইফতেখার আলম সম্পাদক কর্তৃক উত্তর নওদাপাড়া, পো: সপুরা, রাজশাহী-৬২০৩ থেকে প্রকাশিত। মোবাইল: ০১৭১১-২০৮ ১৭২, ০১৮৩৪-৮৬১ ০০৭ ইমেইল: [email protected]
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ নগর