বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার বহুল আলোচিত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ ফের আলোচনায়। সম্প্রতি তাকে “স্ট্যান্ড রিলিজ” করে বদলির নির্দেশ দেওয়া হলেও, রহস্যজনকভাবে সেই বদলি আদেশ রোহিত হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় কৃষক সমাজ ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে একই কর্মস্থলে থেকে তিনি কৃষি অফিসকে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন—এমন অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে। তাদের অভিযোগ, কৃষকদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ধান, ভুট্টা, বাদাম, সয়াবিন কাটার যন্ত্রপাতি প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে, নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের কাছে দিয়েছেন তিনি। এছাড়া বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, ট্রেনিং ও প্রদর্শনীতে কৃষকদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও টিপসই নিয়ে নামমাত্র নাস্তা ও সামান্য অর্থ দিয়ে বিদায় করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে পরিচালিত “পার্টনার ফিল্ড স্কুল (PFS)” প্রকল্পেও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কৃষকদের প্রাপ্য নাস্তা ও সম্মানীর টাকা যথাযথভাবে পরিশোধ না করার বিষয়েও অসন্তোষ রয়েছে। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কর্মস্থলে অবস্থান করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও, তিনি নিয়ম ভঙ্গ করে রাজশাহী শহর থেকে সরকারি গাড়িতে প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাঠকর্মীর দাবি—বদলি আদেশ ঠেকাতে তিনি নানামুখী তদবির চালান এবং এ লক্ষ্যে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেছেন। এমনকি এই অর্থের যোগান দিতে উপজেলা সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও আর্থিক সহায়তা আদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বদলি আদেশ রোহিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে উপজেলার কৃষক সমাজে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে অফিসের শৃঙ্খলা ও সুশাসন মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
এক কর্মকর্তা বলেন, “যদি কোনো কর্মকর্তার স্ট্যান্ড রিলিজের আদেশও স্থগিত করা যায়, তাহলে অফিসে শৃঙ্খলা বলে কিছুই থাকে না। এটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জন্যও বিব্রতকর।”
অভিযোগ অস্বীকার করলেন কৃষি কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ অভিযোগগুলোর তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, আমার অনেক আগে বদলির আদেশ হয়েছিল তবে এখন নতুন করে কোন বদলির আদেশ হয়নি। একজন সরকারি কর্মকর্তা তিন বছরের অধিক সময় ধরে কি এক জায়গায় থাকতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি নিজেও এখান থেকে বদলি হতে আগ্রহী। বদলির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই নানা ধরনের ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। খামারবাড়ির সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ চলছে, এবং বদলি কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্নের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।” তিনি আরও জানান, “যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি আমার দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছি।#
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: রোকনুজ্জামান রোকন নির্বাহী সম্পাদক: ইফতেখার আলম সম্পাদক কর্তৃক উত্তর নওদাপাড়া, পো: সপুরা, রাজশাহী-৬২০৩ থেকে প্রকাশিত। মোবাইল: ০১৭১১-২০৮ ১৭২, ০১৮৩৪-৮৬১ ০০৭ ইমেইল: [email protected]
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ নগর