# আলিফ হোসেন, তানোর, রাজশাহী……………………………………………..
রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী ডুবির বিল ও বিল মেইল সমিতির নামে ইজারা নিয়ে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে রাজস্ব খাতে বিল নার্সারির জন্য ডুবির বিল ও মেইল বিল ইজারা দেয়া হয়। এলাকার হতদরিদ্র মৎস্যজীবীরা সমিতির মাধ্যমে এসব বিল ইজারা নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ডুবির বিলের আয়তন প্রায় ৬৬.৫ হেক্টর, জলাশয় ০৫ হেক্টর, রেনু পোনা ছাড়া হয় ০১ কেজি, উপকারভোগীর সংখ্যা ২২০ জন, দল নেতার নাম গোপণ করা হয়েছে। অন্যদিকে মেইল বিলের আয়তন প্রায় ২০০ হেক্টর, জলাশয় ০.৫ হেক্টর, রেনু পোনা ছাড়া হয় ০১ কেজি, উপকার ভোগীর সংখ্যা ৩০০ জন, দল নেতা অনিল কুমার।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেন, মৎস্যজীবী সমিতির মাধ্যমে এই দুটি বিল ইজারা নেয়া হয়। কিন্ত্ত স্থানীয় সাংসদের নাম ভাঙিয়ে মেলান্দী গ্রামের বিশ্বনাথ হালদারের পুত্র অভয় কুমার ও প্রশান্ত কুমার মৎস্যজীবীদের বাদ দিয়ে নিজেরা ভোগদখল করছে। বিগত ১০ বছর যাবত উপকারভোগী মৎস্যজীবীদের বঞ্চিত করে তারা কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন।
এদিকে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে কৃষকের শত শত বিঘা ফসলী জমি পানিতে ডুবে যায়। কিন্ত্ত তারা বিলের পানি বের করতে না দেয়ায় ফসলহানি ঘটে। মৎস্যজীবীরা জানান, এমপি আয়েন উদ্দিনের ভাই ঘাষিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু, অভয়, প্রশান্ত, বিজয় এবং মোজাহার আলী। এরা জোরপুর্বক মৎস্যজীবীদের বঞ্চিত করে দুটি বিল থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। মৎস্যজীবীদের দাবি বিল দুটি উন্মুক্ত করা হলে এলাকার শত শত হতদরিদ্র মৎস্যজীবীরা ৬ মাস মাছ আহরণ ও ৬ মাস বিলপাড়ে জেগে উঠা জমিতে চাষাবাদ করে জীবীকা নির্বাহ করতে পারতেন।
এবিষয়ে মেলান্দী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি অভয় কুমার হালদার জানান, বিগত ২০১৫ সালে মন্ত্রণালয় থেকে সমিতির নামে লীজ নেয়া হয়। প্রতি বছর লীজ নবায়ন করতে হয়। এমপি ছাড়া লীজ নেয়া যেতো না।
তিনি বলেন, বিগত ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন এমপি প্রয়াত মেরাজ মোল্লার লোকজন লীজ নিয়েছিলেন। অনেক কষ্ট করার পর সমিতির নামে লীজ হয়। সমিতির সদস্য সংখ্যা ৭২ জন। প্রতি বছরে কোটি কোটি টাকার উপরে মাছ বিক্রি করা হয়।
কত টাকায় লীজ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি জানান এসব জেনে কি লাভ। সমিতির নাম করে আপনারা কয়েকজন মাছ চাষ করছেন জানতে চাইলে তিনি কোন সদ উত্তর দেননি। এদিকে সমিতির সাধারণ সদস্যরা জানান, সমিতির নামে কিভাবে লীজ নেই আমরা কিছুই জানি না। অভয় বলেছে, আমরা লীজ নিয়েছি, আমরাই চাষ করছি। এখানে সমিতির কোন যোগ নেই। অভয় সমিতির সভাপতি তার উপরে আমরা কথা বলতে পারি না। কেউ প্রতিবাদ করলে নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকেন। এজন্য তার ভয়ে সমিতির সদস্যরা কেউ কিছু বলে না। তাছাড়া কোন দিন বিলের মাছ বিক্রি লাভের অংশও কেউ দেখতে পায় না। বিল চাষ করে ভাগ্য বদল হয়েছে অভয়সহ কয়েকজনের। সমিতির কোনো লাভ হয়নি।
স্থানীয় মৎস্যজীবিরা বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিল মাইল ও ডুবির বিল অভয় চক্রের। এক সময় বিলে মাছ আহরণ করে কয়েকশ’ পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু অভয় চক্রের কারণে সেটা আর হয় না। অথচ এসব বিলের পাশঘেঁষে তানোর সীমানায় বিল কুমারি বিল রয়েছে। এই বিল কখনো লীজ হয় না। এই বিলে শতশত মৎস্যজীবি পরিবার মাছ আহরণ করে জীবিকানির্বাহ করে আসছেন। বিলে সরকারি খাস সম্পত্তি পর্যাপ্ত রয়েছে, তারপরও এই বিল উন্মুক্ত রয়েছে। তাহলে কি বিবেচনায় ডুবির বিল ও মেইল বিল ইজারা দেয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিথিলা দাসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০ একরের ঊর্ধ্বে হলে জেলা থেকে লীজ হয়। এটা জেলার কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনিসুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কাগজপত্র দেখার পর বলা যাবে।#