মমিনুল ইসলাম মুন, বিশেষ প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর উপজেলার ২নং বাধাইড় ইউনিয়নের একান্ন পুর গোয়ালপাড়া মৌজায় কৃষি জমির মাটি কেটে উঁচু করে বাড়ি নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগপন্থী পলাশ আলী প্রায় ৪২ শতাংশ কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে পাশেই ফেলে বাড়ি নির্মাণের জন্য জমি উঁচু করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমিটি ঝিনাখোর স্কুলের শিক্ষিকা ও পলাশ আলীর স্ত্রী নাজনিন খাতুনের নামে রেকর্ডভুক্ত। ওই জমি খনন করে উঁচু করার ফলে আশেপাশের কৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে এবং জমির শ্রেণি পরিবর্তনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পলাশ আলী বলেন, “আমার ভাই পুলিশের চাকরি করে। তিনিই বিষয়টি দেখছেন। আমরা প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করিনি।”
তবে এ বিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, “এমন কোনো ঘটনার খবর আমি এখনো পাইনি। বিষয়টি যাচাই করে দেখা হবে।” উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাইমা খান বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, শিক্ষক নাজনিন খাতুন বলেন, “আমরা জানতাম শুধু পুকুর খনন করতে প্রশাসনের অনুমতি লাগে। জমি উঁচু করতে অনুমতির প্রয়োজন হয়,এটা আমরা জানতাম না।” আইন কী বলে বাংলাদেশে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন বা উর্বর মাটি কেটে অন্য কাজে ব্যবহার করা ‘কৃষিজমি রক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০২৪’ অনুযায়ী একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। আইনের ৪(১) ধারা অনুসারে , “কোনো ব্যক্তি সরকার বা কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন, মাটি কর্তন বা ভরাট করতে পারবে না।” আইনের ৮(১) ধারা অনুযায়ী , “এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২ (দুই) বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যেতে পারে।” অতএব, অনুমতি ছাড়াই কৃষি জমির মাটি কেটে বাড়ি নির্মাণ বা জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার কাজ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এভাবে কৃষি জমি নষ্ট হলে একদিকে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হবে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।#
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: রোকনুজ্জামান রোকন নির্বাহী সম্পাদক: ইফতেখার আলম সম্পাদক কর্তৃক উত্তর নওদাপাড়া, পো: সপুরা, রাজশাহী-৬২০৩ থেকে প্রকাশিত। মোবাইল: ০১৭১১-২০৮ ১৭২, ০১৮৩৪-৮৬১ ০০৭ ইমেইল: [email protected]
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ নগর