শাহীন আলম লিটন, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি !!!
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় মো. জাহাবক্স (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জাহাবক্স একই গ্রামের মৃত কুদ্দুস আলীর ছেলে। বাড়ির পাশেই তিনি প্রান্ত স্টোর নামের একটি পাইকারি মুদিদোকান চালাতেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা একটি চিঠি থেকে অপহরণের বিষয়টি ধারণা করছে পুলিশ ও পরিবার।
চিঠিতে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ঠিকানায় টাকা না পৌঁছালে লাশ গুম করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ।
জাহাবক্সের স্ত্রী সাথী খাতুন বলেন, ‘আমরা সবাই ঘুমাচ্ছিলাম। রাত ১টার দিকে অপরিচিত একজন ব্যক্তি স্যালাইন কেনার জন্য স্বামীকে ডাক দেন। তিনি দোকান খুলে স্যালাইন দেওয়ার জন্য বাইরে যান। বেশ কিছু সময় পার হলেও তিনি ফিরে না আসায় তাঁকে খুঁজতে ঘরের দরজা খুলতে গেলে বুঝতে পারি বাইরে থেকে ছিটকিনি আটকানো। এ সময় আমার চিৎকারে শাশুড়ি এসে ছিটকিনি খুলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে দোকানে গিয়ে আমার স্বামীকে আর পাইনি। দোকানের তালা খোলা ছিল এবং ক্যাশবাক্সও খালি ছিল। এ সময় দোকানের বাইরে বেঞ্চের ওপর আঠা দিয়ে আটকানো খামের মধ্যে একটি চিঠি পাই। চিঠিতে পাঁচ দিনের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। টাকা না দিলে আর পুলিশকে বললে লাশ পাব না লিখেছে।’
জাহাবক্সের ছেলে প্রান্ত বলেছে, ‘আমার ঘরের দরজাও বাইরে থেকে আটকানো ছিল। বাইরে বেড়িয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাবার ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পাই। আজ সোমবার দোকানে হালখাতা ছিল। অন্য দোকানিরা যাঁরা সপ্তাহে বাকি পরিশোধ করতেন, তাঁরাও টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন। আনুমানিক চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা ক্যাশবাক্সের নিচে রাখা ছিল। সে টাকাও পাওয়া যায়নি। আমরা পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ বাবাকে খুঁজছে।’
এদিকে এ ঘটনায় আজ সকালে বাড়ির সামনে থেকে আব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে থানায় নিয়েছে পুলিশ। আলী হায়দার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জাসদ গণবাহিনীর আঞ্চলিক নেতা দাবি করা আলী রেজা সিদ্দিক কালুর ভাই।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অপহৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তা ছাড়া উদ্ধার হওয়া চিঠি যাচাই-বাছাই করে ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যবসায়ী অপহৃত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।