শাহীন আলম লিটন, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি !!!
১০ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি পালন করেছেন বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এমআরএস ও কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কয়েক হাজার শ্রমিকেরা। সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে থেকে কুষ্টিয়া শহরতলীর বিসিক শিল্প নগরীতে এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানায় কর্মবিরতি পালন শুরু করে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে তাদের সাথে কর্মবিরতি পালন শুরু করে বিআরবির আরেক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকরা। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক এখনো পর্যন্ত কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী রয়েছে।
এরআগে ৮ মে একই দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন এমআরএস মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকরা। সেদিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মালিক পক্ষের সাথে শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। বিআরবি গ্রুপের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের সাথে পাঁচ শ্রমিক প্রতিনিধি আলোচনা করে। বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে আধাঘন্টাব্যাপী পরষ্পরের সাথে কথাবার্তা বলেন। এ সময় মালিকপক্ষের আশ্বাসে সন্তোষ প্রকাশ করে ৮ ঘন্টা কর্মবিরতির পর সন্ধ্যায় কাজে ফিরেছিলেন তারা।
দাবি না মানায় আবারো কর্মবিরতি পালন করছেন প্রায় এক হাজার শ্রমিক।
তাদের দাবি গুলো হচ্ছে:
১। বিআরবি গ্রুপের অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসাবে এমআরএস ও কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডর বেতন বিআরবির সাথে সমন্বয় ও বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট প্রদান করতে হবে।
২। সাপ্তাহিক ছুটির দিন অথবা অন্যান্য সরকারী ছুটির দিন ডিউটি করানো হলে বদলী ছুটির পরিবর্তে অতিরিক্ত কর্মঘন্টা হিসাবে ওভার টাইম প্রদান করতে হবে।
৩। কোম্পানীর নিয়মানুযায়ী যে সকল ছুটি শ্রমিক, কর্মচারী অথবা কর্মকর্তার জন্য বরাদ্দ আছে তা যথাযথ ভাবে প্রদান করতে হবে।
৪। কর্মচারী/কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক প্রথা বাতিল করে চাকুরী স্থায়ীকরণ করতে হবে।
৫। পরিবহন বিভাগের ড্রাইভার/হেলপার কারখানা হইতে দুপুর বারোটার পর ট্রিপে গেলে যে অর্ধেক ডিএ প্রথা আছে তা বাতিল করে পূর্ন ডিএ প্রদান করতে হবে।
৬। কর্মরত অবস্থায় কোন শ্রমিক আহত হলে তার চিকিৎসার সার্বিক ব্যবস্থা করতে হবে। এবং অসুস্থতার কারনে কর্মস্থলে যোগদান করতে না পারলে তার বেতনের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
৭। সরকার ঘোষিত করোনা কালীন সময়ে ছুটির পরেও কোম্পানী কর্তৃক যে বেতন প্রদান করা হয়েছিল তা অবসর কালীন সময়ে তিন মাসের বেতন কর্তন প্রথা বাতিল করতে হবে।
৮। জামানতের টাকা ফেরত দিতে হবে।
৯। চাকুরীর নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
১০। ওয়েল ফেয়ার ফান্ডে আবেদনকারীর আবেদন গুরুত্ব দিতে হবে।
এ বিষয়ে প্লাইউড, পার্টিকেল বোর্ডসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পার্টিক্যাল ইনচার্জ আবু তালেব ও শামসুল রহমান বলেন, ‘আমরা বৈষম্যের শিকার। মালিক পক্ষ শ্রম আইন মানে না। তারা শ্রমিকদের বঞ্চিত করে। আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি বারবার জানালেও আমাদের দাবি মানা হয় না। আমাদের বারবার আশ্বাস দেয়া হয় কিন্তু আমাদের দাবি মানা হয় না। আমাদের দাবিগুলোর মেনে নেয়ার আগ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো, আমরা কাজে ফিরবো না। আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলন করবো।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য এমআরএস ও কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।#